ইরানের তেল স্থাপনায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার খবরে তেলের দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকরা বাইডেনকে প্রশ্ন করেছিলেন, ইসরায়েল কি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দিতে গিয়ে তেহরানের তেল স্থাপনায় আক্রমণ চালাবে? জবাবে বাইডেন বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।’
ইরানের একটি তেলের খনি। ফাইল ছবি: এএফপি
ইরানের একটি তেলের খনি। ফাইল ছবি: এএফপি

ইরানের তেল স্থাপনায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি আক্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এ খবরে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই বেড়ে যায়।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকরা বাইডেনকে প্রশ্ন করেছিলেন, ইসরায়েল কি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দিতে গিয়ে তেহরানের তেল স্থাপনায় আক্রমণ চালাবে? জবাবে বাইডেন বলেছেন, 'আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।'

যা বললেন বাইডেন

বাইডেনের এই মন্তব্যের পরই আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম পাঁচ শতাংশ বেড়ে যায়।

বাইডেন অবশ্য বলেছেন সর্বাত্মক লড়াই এড়ানো যাবে বলে তিনি মনে করেন। বাইডেনের বক্তব্য, 'আমি মনে করি, আমরা তা এড়াতে পারব। তবে আমরা ইসরায়েলকে সাহায্য করব।'

বাইডেন বলেন, 'আজই কিছু হচ্ছে না।'

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন জো বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন জো বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, ইরানের পারমানবিক কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা তিনি সমর্থন করেন না।

জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত ড্যানি ড্যানন বৃহস্পতিবার সিএনএনকে বলেছেন, 'পাল্টা হামলার অনেক বিকল্প আছে। আমরা শিগগির তেহরানকে আমাদের শক্তি কতটা তা দেখাতে পারব।'

মঙ্গলবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। তারপরেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন, তারা পাল্টা জবাব দেবেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, আক্রান্ত হলে তারাও পাল্টা হামলা করতে প্রস্তুত। তিনি জানিয়েছেন, 'যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী, জঙ্গি হামলা হলে বা কেউ যদি সীমা অতিক্রম করে, তাহলে আমাদের সেনাবাহিনী তার জবাব দেবে।'

বৈরুতে ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত

ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতের ভগ্নদশা। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতের ভগ্নদশা। ছবি: রয়টার্স

বৈরুতে ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত আছে। শুক্রবার সকালেও বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়েছে বলে লেবাননের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এর ফলে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি। এছাড়া বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলিতেও মধ্যরাতের পর ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়েছে। এই জায়গা হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।

নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট বলছে, হাসান নাসরাল্লার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে যাকে ভাবা হচ্ছে, সেই হাশেম সাফিএদ্দিনকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার বক্তব্য

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তর। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তর। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে

লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণে ২৮ স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা। তারা বলেছে, ৩৬টির মতো স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

বৈরুতের পাঁচটি হাসপাতাল হয় পুরোপুরি বা আংশিকভাবে খালি করে দেয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, যে সব জায়গায় বোমা পড়েছে, সেখান থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা পালিয়ে গেছেন। তাই তারা কাজে আসতে পারছেন না। বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকায় তারা ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী পাঠাতে পারেননি।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে ইসরায়েল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

লেবাননের রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা যখন একটি হাসপাতাল থেকে আহতদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সেখানে ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়। তাতে চারজন স্বাস্থ্যকর্মী আহত হন। লেবাননের এক সেনার মৃত্যু হয়েছে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননের ২০টি শহর খালি করে বাসিন্দাদের অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার জন্য বলেছে। এই নিয়ে সব মিলিয়ে লেবাননের ৭০টি এলাকা থেকে বাসিন্দাদের চলে যেতে বললো ইসরায়েল।

গুতেরেসের পাশে নিরাপত্তা পরিষদ

জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস। ফাইল ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে তাদের দেশে ঢুকতে দেবে না। তারা গুতেরেসের ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

এই পরিস্থিতিতে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, 'জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বা জাতিসংঘকে নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে বাধ্য, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে।'

তবে এই বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম নেয়া হয়নি। বলা হয়েছে, 'জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে সব সদস্য দেশের সুসম্পর্ক রাখা উচিত, তাদের এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যাতে তার পদমর্যাদা ও কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।'

এপি, এএফপি, রয়টার্স

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

7h ago