রুশ সরকারি টিভির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধ আরোপ, পাল্টা ব্যবস্থা নেবে রাশিয়া

রাশিয়া টুডে (আরটি) টিভির স্টুডিও। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে
রাশিয়া টুডে (আরটি) টিভির স্টুডিও। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করছে রাশিয়ার সরকারি টিভি চ্যানেল আরটি নেট। এমন অভিযোগে আরটি (রাশিয়া টুডে) নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত ১০ ব্যক্তি ও দুইটি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে টিভি চ্যানেলটির প্রধান সম্পাদক ও সহকারী প্রধান সম্পাদকও আছেন।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স ও ডয়চে ভেলে। 

ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, 'আমাদের দেশের সংস্থাগুলোর ওপর থেকে যাতে মানুষের আস্থা চলে যায়, সেটা নিশ্চিতে আরটি নেটওয়ার্ক অপপ্রচার চালাচ্ছিল। এতে মদদ দিয়েছে রুশ সরকার।'

'মার্কিন সরকার এই পদক্ষেপ নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, এ ধরনের প্রচারের পিছনে যারা আছে, তাদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে', যোগ করেন তিনি।

ইতোমধ্যে একই ধরনের পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। 

মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, 'এই নেটওয়ার্কটি যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়োগ দিয়েছিল। এই ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে তারা ক্রেমলিনপন্থি বার্তা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন।'

অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ড জানিয়েছেন, 'রাশিয়ার আরটি নেটওয়ার্কের দুই কর্মী নিউইয়র্কে বিদেশি মুদ্রা আইন ও বিদেশি এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন আইন ভাঙার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'ওই দুই অভিযুক্ত ব্যক্তি টেনেসি ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিয়েছিল। রাশিয়ার পক্ষে প্রচার চালানোর জন্য এই অর্থ দেয়া হয়। ওই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে এই প্রচার চালাবে বলে নির্ধারণ করা হয়।'

সরকার জানিয়েছে, এরপর ওই সংস্থা অভিবাসন, মুদ্রাস্ফীতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রায় দুই হাজার ভিডিও বানায়। নভেম্বর থেকে এসব ভিডিও এক কোটি ৬০ লাখ বার দেখেছে মানুষ।

হোয়াইট হাউসের বক্তব্য

হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরটি নেটওয়ার্কের এই উদ্যোগের বিষয়টি জানতেন। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবির দাবি, 'আমাদের বিশ্বাস পুতিনের নির্দেশেই এই কাজ করেছে আরটি।'

মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অভিযোগ নয়।

২০২০ সালেও রাশিয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুকূলে ভোটদাতাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স
২০২০ সালেও রাশিয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুকূলে ভোটদাতাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালেও রাশিয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুকূলে ভোটদাতাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল।

২০১৬ সালের ভোটেও রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল বলে মার্কিন গোয়েন্দারা মনে করেন। সেখানেও তারা ট্রাম্পের পক্ষেই ছিল বলে তারা মনে করছেন। পরে ট্রাম্পের টিমের সঙ্গে রাশিয়ার বেআইনি আঁতাত নিয়ে তদন্তও হয়।  কিন্তু সেই তদন্তে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া

আজ বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, মস্কোও মার্কিন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

মারিয়া এই উদ্যোগকে 'আলেয়ার পিছে ছোটার' সঙ্গে তুলনা করেন এবং বলেন, মার্কিন জনগণকে আতংকিত করার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

আরটি অ্যাপের স্ক্রিণশট। ছবি: Reuters
আরটি অ্যাপের স্ক্রিণশট। ছবি: Reuters

'যুক্তরাষ্ট্র তার জনগণের জন্য সব ধরনের তথ্য ও গণমাধ্যমকে উন্মুক্ত রাখতে দায়বদ্ধ। কিন্তু মার্কিন কতৃপক্ষ সেই দায়িত্বের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উদ্যোগ নিচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে', যোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, মস্কোর উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের মতো বা ভিন্ন কিছুও হতে পারে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Govt to expedite hiring of 40,000 for public sector

The government has decided to expedite the recruitment of 6,000 doctors, 30,000 assistant primary teachers, and 3,500 nurses to urgently address the rising number of vacancies in key public sector positions.

7h ago