পশ্চিম তীরে শরণার্থী শিবির-হাসপাতালে হামলা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪

তুলকারেমের নুর শামস শিবিরে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ দেখে হতবাক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: এএফপি
তুলকারেমের নুর শামস শিবিরে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ দেখে হতবাক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: এএফপি

গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও বড় আকারে সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। বুধবার ভোর থেকে চলছে নির্বিচার গণহত্যামূলক হামলা। এসব হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

তুলকারেমে শরণার্থী শিবির ও হাসপাতালে হামলা

আল শামস শিবিরে ড্রোন হামলা পরবর্তী দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স
আল শামস শিবিরে ড্রোন হামলা পরবর্তী দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে হামলা চালাচ্ছে। এর আগে, ভোরে 'স্পেশাল ফোর্সের' স্নাইপাররা কাছাকাছি উঁচু ভবনগুলোতে অবস্থান নেয়। ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা এই তথ্য জানিয়েছে।

ওয়াফার সংবাদদাতা জানান, শিবিরের ওপর দিয়ে কম উচ্চতায় হেলিকপ্টার-বিমান উড়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি সেনারা একটি বাড়ির দিকে রাইফেল থেকে ট্যাংক বিধ্বংসী গোলা ছুঁড়েছেন। গোলার আঘাতে বাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। কেউ হতাহত হয়েছে কী না, তা নিশ্চিত নয়। উদ্ধারকর্মীদের শিবিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

'কাউকে নড়তে দেখলেই নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি স্নাইপার', জানান ওয়াফার সংবাদদাতা।

তিনি আরও জানান, থাবেত থাবেত সরকারি হাসপাতাল ও আল-ইসরা বিশেষায়িত হাসপাতালেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

গ্রেপ্তার ও নির্যাতন

পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ফিলিস্তিনিদের আটক করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি: এএফপি
পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ফিলিস্তিনিদের আটক করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, বুধবার ভোর থেকে পশ্চিম তীরে বড় আকারে অভিযান শুরুর পর শিশুসহ মোট ২০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েল। 

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং তারা আরও বেশি মানুষকে আটক করতে পারে।

তারা জানিয়েছে, যাদেরকে আটকের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাদের শরীরে 'আঘাত ও নির্যাতনের' স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।

জেনিন, তুবাস ও তুলকারেম শহর ও সেখানে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ১২ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।

পশ্চিম তীরে দিনভর অভিযান, তল্লাশি ও হামলা

পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় পথচারীদের সঙ্গে আলাপ করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি: এএফপি
পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় পথচারীদের সঙ্গে আলাপ করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি: এএফপি

গতকাল পশ্চিম তীরে দিনভর ইসরায়েলি হামলা ও গ্রেপ্তারের বিস্তারিত জানিয়েছে ওয়াফা।

তুবাসের দক্ষিণে ফার'আ আশ্রয়শিবিরে তিন ফিলিস্তিনি আহত হন। দুইজনকে ইসরায়েলি সেনারা মারধর করে এবং ওপর ব্যক্তির গায়ে বুলেটের শ্র্যাপনেল আঘাত করে।

বেথেলেমের দক্ষিণে আল-খাদের শহরে স্থানীয়দের সঙ্গে হাতাহাতির এক পর্যায়ে ইসরায়েলি সেনারা নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় হতাহতের সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালায়। এতে শহরের বড় একটি অংশে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

হেবরনের উত্তরে আররৌব আশ্রয় শিবিরে অতর্কিতে ঢুকে পড়ে সেনারা। এ ছাড়া, তুলকারেমের পশ্চিমে নুর শামস আশ্রয় শিবিরে বেশ কিছু বাড়িঘরে অভিযান ও তল্লাশি চালায় তারা।

নাবলুস শহরে সেনা অভিযান ও রামাল্লাহ শহরের উত্তর-পশ্চিমে নাবি সালেহ গ্রামে তল্লাশি চালানো হয়।

ইসরায়েলের দাবি

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার 'সন্ত্রাসবিরোধী' অভিযানে পাঁচ ফিলিস্তিনি জঙ্গিকে হত্যা করেছে তারা।

বুধবার তারা তুলকারেম, জেনিন ও তুবাসে নয় জঙ্গিকে হত্যার দাবি করে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

3h ago