অনির্দিষ্টকালের জন্য গাজায় জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ কর্মসূচি বন্ধ

উত্তর গাজার জাবালিয়া ক্যাম্পে জাতিসংঘের দেওয়া ত্রাণ নিতে মানুষের ভীড়। ফাইল ছবি: রয়টার্স
উত্তর গাজার জাবালিয়া ক্যাম্পে জাতিসংঘের দেওয়া ত্রাণ নিতে মানুষের ভীড়। ফাইল ছবি: রয়টার্স

জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা গাজায় সব ধরনের মানবিক ত্রাণ কর্মসূচি স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। কবে এই কার্যক্রম আবারও শুরু হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি জাতিসংঘ।

এ সপ্তাহে গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানান, এই নির্দেশনার কারণেই তারা ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

কর্মকর্তা জানান, 'আজ আমরা আমাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি। আজ সকাল থেকে গাজায় আমাদের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।'

তিনি জানান, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকেই গাজায় মানবিক কার্যক্রম পরিচালনায় বারবার বাধার মুখে পড়েছে জাতিসংঘ। অনেক সময় ত্রাণের সরবরাহ স্থগিত রাখতে বা বিলম্বিত করতে হয়েছে। 

কর্মকর্তা জানান, 'বিষয়টা এমন না যে আমরা (আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে) কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে বাধ্য হয়ে আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়েছে।'

উত্তর গাজার জাবালিয়া ক্যাম্পে জাতিসংঘের দেওয়া ত্রাণ নিতে মানুষের ভীড়। ফাইল ছবি: রয়টার্স
উত্তর গাজার জাবালিয়া ক্যাম্পে জাতিসংঘের দেওয়া ত্রাণ নিতে মানুষের ভীড়। ফাইল ছবি: রয়টার্স

কর্মকর্তা আরও জানান, 'কয়েক মাস আগে রাফা থেকে সরে যেতে বলার পর জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ কর্মসূচীর সঙ্গে জড়িত জনবল ও অন্যান্য অবকাঠামো দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। এবার সেখান থেকেও সরে যাওয়ার নির্দেশ এলো।'

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সোমবার জানিয়েছে, তারা দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে জঙ্গি অবস্থান লক্ষ্য করে অভিযান চালাবে। তাদের লক্ষ্য, হামাসের 'অবশিষ্ট জঙ্গি কাঠামো' নির্মূল করা।

রোববার আইডিএফ এ এলাকার বাসিন্দাদের 'তাৎক্ষণিক ভাবে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার' নির্দেশ দেয়।

'আমাদের সমাধান খুঁজে বের করতে হবে', নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতিসংঘের সেই কর্মকর্তা বলেন।

'এতে যদি আমাদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা চুপচাপ বসেও থাকতে হয়, তাতেও সমস্যা নেই। আমরা এখন থেকে চলে যাব না', যোগ করেন তিনি।

'এ মুহূর্তে, সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে এমন একটি জায়গা খুঁজে পাওয়া যেখানে আমরা নতুন করে আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারব', বলেন তিনি।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন। ধারণা করা হয়, গাজায় এখনো ১০৫ জিম্মি অবস্থান করছেন। এ ছাড়া আইডিএফ নিশ্চিত করেছে, হামাসের কাছে ৩৪ জনের মরদেহও রয়েছে। বাকিরা নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির সময়য় বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে মুক্তি পান।

গাজা সীমান্তে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ট্রাক। ফাইল ছবি: রয়টার্স
গাজা সীমান্তে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ট্রাক। ফাইল ছবি: রয়টার্স

হামলার পর, সেদিনই গাজায় নির্বিচার ও প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ৪৩৫। আহত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৫৩৪। হতাহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের দাবি, যুদ্ধে ১৭ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ৭ অক্টোবর আরও এক হাজার যোদ্ধার মৃত্যু হয়।

ইসরায়েল বলেছে, তারা বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা করে না। তবে হামাস ফিলিস্তিনি নাগরিকদের 'মানব-ঢাল' হিসেবে ব্যবহার করে। তারা বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল ও মসজিদের ভেতর থেকে হামলা পরিচালনা করে বলে বারবার আইডিএফ দাবি জানিয়ে এসেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

What's causing the unrest among factory workers?

Kalpona Akter, labour rights activist and president of Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation, talks to Monorom Polok of The Daily Star about the recent ready-made garments (RMG) workers’ unrest.

8h ago