বোমা নয়, স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে হানিয়াকে হত্যা: ইরান

ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হানিয়া। ছবি: এএফপি
ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হানিয়া। ছবি: এএফপি

ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) দাবি করেছে, বোমা বিস্ফোরণে নয়, বরং স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই প্রাণ হারিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।

বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যমে একাধিক ইরানি ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, তেহরানে যে গেস্টহাউসে হানিয়া অবস্থান করছিলেন, সেখানে আগে থেকেই রিমোট নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক লুকানো ছিল। দূর থেকে সেই মারণাস্ত্রটি সক্রিয় করা হলে বিস্ফোরণে হানিয়া ও তার দেহরক্ষী নিহত হন।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইআরজিসি সদস্যদেরও বরাত দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রায় দুই মাস আগে এই কক্ষে অন্য দেশ থেকে চোরাই পথে এই বোমাটি ইরানে এনে সেই গেস্টহাউসে স্থাপন করা হয়।

হানিয়ার হত্যাকাণ্ড ইরানের উচ্চ-প্রশিক্ষিত বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জন্য বেশ বিব্রতকর হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ হানিয়াকে যেখানে রাখা হয়েছিল, সেই গেস্টহাউসের সুরক্ষার ভার ছিল আইআরজিসির হাতেই।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত আইআরজিসির বিবৃতিতে বলা হয়, 'এ হামলার জন্য দায়ী ইসরায়েল এবং এতে সমর্থন জুগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।'

বিবৃতিতে আবারও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

তেহরানের এই গেস্টহাউসেই ছিলেন হানিয়া। ছবি: সংগৃহীত
তেহরানের এই গেস্টহাউসেই ছিলেন হানিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিবৃতি মতে, বুধবার একটি সাত কেজি (প্রায় ১৫ পাউন্ড) ওয়ারহেড ব্যবহার করে তেহরানের সেই গেস্টহাউসে হামলা চালানো হয়। 'এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়', দাবি করছে ইরান।

'এই হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায় জায়নবাদী শাসক (ইসরায়েল) ও তাদেরকে সমর্থন জুগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র', আইআরজিসির বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

আইআরজিসি আরও জানায়, 'জঙ্গি ও যুদ্ধবাজ জায়নবাদী শাসকরা উপযুক্ত সময়ে ও অবস্থানে যথাযথ জবাব পাবে।'

হানিয়াকে হত্যার দায় স্বীকার বা অস্বীকার, কোনোটিই করেনি ইসরায়েল। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে যান হামাস নেতা হানিয়া। সেখানেই প্রাণ হারান তিনি।

তবে এর আগে ইসরায়েল হানিয়া ও অন্যান্য সব হামাস নেতাকে হত্যার শপথ নেয়। মূলত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার জেরে এই অঙ্গীকার জানায় নেতানিয়াহু সরকার।

একইদিনে হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শোকর ও হানিয়ার মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় আকারে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

দোহায় হানিয়ার দাফন শেষে শোকসভার আয়োজন করা হয়। ছবি: রয়টার্স
দোহায় হানিয়ার দাফন শেষে শোকসভার আয়োজন করা হয়। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলা ঠেকাতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় এক হাজার ১৯৭ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।

হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন মানুষ, যাদের ১১১ জন এখনো গাজায় আটক আছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জিম্মিদের মধ্যে ৩৯ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।

সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার ও প্রতিশোধমূলক গণহত্যা শুরু করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৯ হাজার ৫৫০ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ৯১ হাজার ২৮০ জন মানুষ। হতাহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

Comments

The Daily Star  | English
ADP implementation failure in Bangladesh health sector

Dev budget expenditure: Health ministry puts up poor show again

This marks yet another year of weak budget execution since the health ministry was split into two divisions in 2017.

10h ago