ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়েছে ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস

যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণার পাশাপাশি, ন্যাটোর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের সদস্যপদের আবেদনের অনুমোদন প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানো হবে।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমানে বসেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন
ডেনমার্কের স্কিডস্ক্রুপ বিমানঘাঁটিতে একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানে বসেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০ আগস্ট, ২০২৩)

ন্যাটোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে জোটের মিত্র দেশগুলো ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইউক্রেনের কাছে মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১৬ পাঠাতে শুরু করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণার পাশাপাশি, ন্যাটোর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের সদস্যপদের আবেদনের অনুমোদন প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানো হবে।

ওয়াশিংটনে তিন দিনের সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল জোটের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা। তবে এ বিষয়কে ছাপিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে ন্যাটো জোটের চেয়েও ছয় বছরের বড়, ৮১ বছর বয়সী জো বাইডেনের টিকে থাকার বিষয়টি।

বিশ্লেষকরা এই সম্মেলনকে জো বাইডেনের জন্য অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করেন।

বাইডেন আলাদা করে জোটের অপর ৩১ নেতাকে স্বাগত জানান এবং রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কেনা এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের মহড়া পরিচালনা করছে পাকিস্তান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কেনা এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের মহড়া পরিচালনা করছে পাকিস্তান। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বাইডেন সম্মেলনে বলেন, 'ন্যাটো (ও মিত্রদের) ভূখণ্ডের প্রতিটি ইঞ্চি সুরক্ষিত রাখার সক্ষমতা আমাদের আছে এবং আমরা সবাই মিলে তা নিশ্চিত করব।'

বাইডেন জানান, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ড ইতোমধ্যে ইউক্রেনে এফ-১৬ পাঠাতে শুরু করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে গত বছর কিয়েভকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করল ন্যাটো। দুই বছর আগে শুরু হওয়া সংঘাতের শুরু থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে আকাশ হামলা সক্ষমতায় পাল্লা দিতে হিমশিম খেয়েছে ইউক্রেন।

এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে নতুন আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত বিরতিতে জার্মানিতে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে সম্মত হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়টি ভ্লাদিমির পুতিনকে বিচলিত করেছে। তিনি বুঝতে পারবেন যে (এই যুদ্ধে) ইউক্রেনই টিকে থাকবে। তিনি নন। 

অপরদিকে, নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইউরোপে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনতে ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে ভূখণ্ড আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করবেন। 

তিনি অসংখ্যবার ন্যাটো জোটের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে গঠিত এই সামরিক জোটকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাড়তি বোঝা মনে করেন ট্রাম্প।

বাইডেন এই সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানান। তিনি তার বক্তব্যে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের জন্য জোটের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, 'নতুন এই যুদ্ধবিমানগুলো আমাদেরকে ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যাবে। এতে প্রমাণ হবে, জঙ্গিবাদের পতন নিশ্চিত।'

আকাশে মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানে জ্বালানি ভরা হচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স
আকাশে মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানে জ্বালানি ভরা হচ্ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সম্মেলনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের প্রতি সহযোগিতার অব্যাহত রাখার বিষয়টিকে 'ট্রাম্প-প্রুফ' করা। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনেও যাতে ইউক্রেন বিপদে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা।

সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বদলে ন্যাটো জোটকে এই সহযোগিতার কেন্দ্রে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আগামীতে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশ এককভাবে সহায়তা না দিয়ে ন্যাটো জোটের সমন্বিত প্রকল্প হিসেবে ইউক্রেনকে সামরিক সহযোগিতা দেবে।

যৌথ ঘোষণায় ন্যাটো নেতৃবৃন্দ জানিয়েছে, ইউক্রেনকে 'আগামী এক বছরের মধ্যে' ৪০ বিলিয়ন ইউরো (৪৩ বিলিয়ন ডলার) মূল্যমানের সামরিক সহায়তা দেওয়া হবে। 

অপরদিকে, ট্রাম্পের সহযোগীরা জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে কিয়েভের প্রতি সহযোগিতা বন্ধ রেখে তাদেরকে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করা হবে। ট্রাম্পের মতে, রাশিয়া নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মূল উদ্বেগের বিষয় চীনের উত্থান। 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago