আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স

আরএসএফ জানিয়েছে যে তাদের কাছে বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে যে ‘কিছু সাংবাদিককে স্বেচ্ছায় হত্যা করা হয়েছে এবং বাকিরা বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) নির্বিচার হামলার ভুক্তভোগী’
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের স্থায়ী ভবন। ছবি: আইসিসির ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের স্থায়ী ভবন। ছবি: আইসিসির ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) আজ জানিয়েছে তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হত্যা ও আহত করার দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। 

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

আরএসএফ জানিয়েছে, তারা ডিসেম্বর ১৫ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত অন্তত নয় জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের তদন্ত করার জন্য আইসিসির কৌঁসুলিকে আহ্বান জানিয়েছে। 

জানুয়ারিতে আইসিসি জানায়, তারা গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত শুরু পর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ নিয়ে তদন্ত করছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।

আরএসএফ জানিয়েছে যে তাদের কাছে বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে যে 'কিছু সাংবাদিককে স্বেচ্ছায় হত্যা করা হয়েছে এবং বাকিরা বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) নির্বিচার হামলার ভুক্তভোগী'

অভিযোগে আরএসএফ ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০ মের মধ্যে নিহত আট ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের কথা উল্লেখ করে। পাশাপাশি আহত হয়ে পরবর্তী নিহত হয়েছেন এমন একজনের কথাও বলেছে সংস্থাটি।

'নিজ নিজ দায়িত্ব পালনকালে এই সাংবাদিকরা হতাহত হন', যোগ করে আরএসএফ।

আরএসএফের অ্যাডভোকেসি ও অ্যাসিস্ট্যান্স পরিচালক অ্যান্টন বার্নার্ড বলেন, 'যারা সাংবাদিকদের হত্যা করে, তারা জনগণের তথ্যের অধিকারের বিরুদ্ধে হামলা করছে, যেই অধিকার রক্ষা করা সংঘাতের সময় অত্যন্ত জরুরি।'

গত সপ্তাহে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান আইসিসিকে শীর্ষ ইসরায়েলি ও হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে আলোচনায় এসেছেন।

আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান। ফাইল ছবি: এএফপি
আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান। ফাইল ছবি: এএফপি

ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি জানিয়েছে, গাজার যুদ্ধে অন্তত ১০৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি ১৯৯২ সাল থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের পর এত কম সময়ে এত জন সাংবাদিক নিহতের ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করে। এই সময়কালকে 'সাংবাদিকতার জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ সময়' বলে অভিহিত করে সংস্থাটি। 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৭০ জন নিহত হন। হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫২ জন। জিম্মিদের মধ্যে ১২৪ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩৭ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মেদ আবু হাত্তাবের জানাজায় অংশ নিছেন তার সহকর্মী, আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব। দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে নিহত হন তিনি। ছবি: রয়টার্স
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মেদ আবু হাত্তাবের জানাজায় অংশ নিছেন তার সহকর্মী, আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব। দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে নিহত হন তিনি। ছবি: রয়টার্স

এই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে সেদিনই গাজার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ও নির্বিচার বিমানহামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরবর্তীতে স্থলবাহিনীও এতে যোগ দেয়। গত ৭ মাসে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা অন্তত ৩৫ হাজার ৯৮৪। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

 

Comments