ঈদের ছুটিতে ঢাকায় ডেঙ্গুঝুঁকি বেড়েছে

রাজধানীর ইন্দিরা রোডে একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে পানি জমে আছে। ছবি: স্টার

নিত্য যানজট ও জঞ্জাল থেকে কিছুটা অবকাশ পেয়ে ঢাকা নির্জন রূপ ধারণ করলেও ঈদুল আজহার ছয় দিনের এই ছুটি শহরে ডেঙ্গু ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই সময় রাজধানীর অনেক নির্মাণাধীন ভবন, ফাঁকা বাড়ি, অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এডিস মশার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক হওয়ায় মশাবাহিত এই রোগের বিস্তার বেড়েছে।

এখনই নগরবাসীর পাশাপাশি সিটি করপোরেশনকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যথায় বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে বৃষ্টি।

নির্মাণাধীন অনেক ভবনে পানি জমে থাকায় তা এডিসের প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

১৭-২৬ এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বর্ষা-পূর্ববর্তী জরিপে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৯টি ওয়ার্ড ও উত্তর সিটি করপোরেশনের ১২টি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার উচ্চ ঘনত্বের সন্ধান পাওয়া গেছে।

যেসব স্থানে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে তার মধ্যে ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ উঁচু ভবন, ২১ দশমিক ছয় শতাংশ পৃথক বাড়ি, ২১ দশমিক ছয় শতাংশ নির্মাণাধীন ভবন, ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ আধা-কংক্রিট ঘর ও এক দশমিক ৭৩ শতাংশ খোলা জায়গা।

এডিসের প্রজনন উত্সগুলোর মধ্যে ১৮ শতাংশ প্লাস্টিকের ড্রামে, ১৫ শতাংশ মেঝেতে জমে থাকা জলে ও ১৪ শতাংশ প্লাস্টিকের বালতিতে পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে গতকাল সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সারা দেশে অন্তত ৪০ জন মারা গেছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ২১৮ জন।

কীটতত্ত্ববিদ জিএম সাইফুর রহমান বলেন, 'এবারের ঈদে প্রায় এক সপ্তাহ ছুটি ছিল, যেই সময় এডিসের বংশ বিস্তারের জন্য যথেষ্ট। ফলে নতুন প্রজনন উত্স বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক বেশি।'

'এসব দেখভালের জন্য মনিটরিং সেল থাকলে ঝুঁকি কম হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা নেই', বলেন তিনি।

ছুটির পরে ঘরে ফিরে মশার মারার ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি এডিসের প্রজনন উৎসগুলো ধ্বংস করার পরামর্শ দেন এই কীটতত্ত্ববিদ।

একইভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগুলোকেও বন্ধের পর খোলার আগে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানান তিনি।

সাইফুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশন এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং দীর্ঘ ছুটির পর ক্লাস শুরু হওয়ার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মশানিরোধক স্প্রে করতে পারে।

'এ বিষয়ে আরও সচেতনতা তৈরি করা খুবই প্রয়োজন। কারণ ডেঙ্গু বাংলাদেশে একটি গুরুতর সমস্যা', বলেন তিনি।

ছুটির পর সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে সাইফুর রহমান আরও বলেন, সিটি করপোরেশনকে তাদের মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, নির্মাণকাজ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকায় নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করবে। তাই ওই সাইট ও ভবন সংলগ্ন স্থানগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

নির্মাণাধীন ভবন বা সংলগ্ন স্থানের বাসিন্দাদের এডিসের প্রজনন উত্স ধ্বংস করার উদ্যোগ নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এডিস লার্ভা ধ্বংস করার জন্য জমে থাকা পানিতে কেরোসিন বা ব্লিচিং পাউডার দেওয়া যেতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Vandalism, arson spread

Houses of Awami League leaders were attacked and torched, and murals and busts of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman were demolished and defaced in nearly two dozen districts yesterday.

13h ago