১৮ জেলায় তাপদাহ, গরম সামান্য কমতে পারে
দেশের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষত উপকূলীয় অধিকাংশ জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
দেশের আরও কিছু জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে আবহাওয়া অধিদপ্তর অতি ভারী বৃষ্টি বিবেচনা করে।
এই সময় টেকনাফে ২৩৪ মিলিমিটার, পটুয়াখালীতে ১৭৪ ও খেপুপাড়ায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৬৭ মিলিমিটার, রাঙ্গামাটি ও হাতিয়ায় ৪৬, বান্দরবানে ৪৭, সন্দ্বীপে ৫৭, কুতুবদিয়ায় ৫৮ এবং বরিশালে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে দক্ষিণাঞ্চলের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও দেশের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের চিত্র ভিন্ন।
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নীলফামারী, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা শেরপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা এবং সিলেট বিভাগের চার জেলা মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ওপর দিয়ে মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে।
অর্থাৎ এসব জেলার তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক নয় ডিগ্রি সেলসিয়াসের ভেতরে রয়েছে। তবে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি যাচ্ছে না। আজ সকাল ৬টায় ঢাকার বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। গতকাল ছিল ৯৩ শতাংশ।
আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে, আজ রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টি হলে কিছু কিছু জায়গায় তাপদাহ প্রশমিত হবে।
দুই কারণে উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের দক্ষিণপূর্বাংশ ও উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ অবস্থান করছে।
এটি আরও শক্তিশালী হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে এগিয়ে আসতে পারে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। সেই মেঘ ভেসে এসে বৃষ্টি ঝরাবে। উপকূলীয় এলাকায় অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে বর্ষণ হতে পারে এবং ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার ভূমিধসে কক্সবাজারে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের ভেতরে ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা থাকায় আগামী দুই দিন চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি সমতল দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরের কোনো কোনো জায়গায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টি হওয়ায় বাড়বে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদ-নদীর পানির সমতল।
Comments