১০ বছরে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি বেড়েছে

ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি যখন এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে, এমন সময়েই শহুরে তাপ দ্বীপের প্রভাবে ঢাকার তাপমাত্রা ১০ বছরে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে।

শহুরে তাপ দ্বীপ বলতে এমন একটি অবস্থা বোঝায়, যখন শহরাঞ্চলগুলোর তাপমাত্রা পরিবহন, শিল্পায়ন, নির্মাণকাজ ও তাপ-শোষক পদার্থের ভারী ঘনত্বসহ নানা কারণে এর আশেপাশের গ্রামীণ এলাকার তুলনায় বেশি থাকে।

'অ্যা কেস স্টাডি অব দ্য টেম্পোরাল ইভালুয়েশন অব আরবান হিট আইল্যান্ড (ইউএইচআই) ইফেক্ট: ইমপ্যাক্টস অন ওয়াটার অ্যাভেইলেবিলিটি অ্যান্ড এয়ার কোয়ালিটি অব ঢাকা সিটি' শিরোনামের গবেষণায় বলা হয়েছে, 'শহুরে তাপ দ্বীপের প্রভাবে ঢাকার তাপমাত্রা প্রায় ছয় ডিগ্রি বেড়েছে, যা উদ্বেগজনক। তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই হার পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও নগর অবকাঠামোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।' গবেষণাটি এখনো প্রকাশিত হয়নি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের ফলে ঢাকায় জলাভূমি ও খোলা জায়গা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।

'রাজধানীর তাপ শুষে নিতে গাছপালা ও জলাশয় বেশি থাকা দরকার। তা না হলে তাপ বাড়তেই থাকবে', বলেন তিনি।

অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, জনসংখ্যার ঘনত্ব, সবুজের অভাব, ভবনের অসম উচ্চতা ও মানুষের কর্মকাণ্ডই শহুরে তাপ দ্বীপে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতার প্রধান কারণ।

ইউনাইটেড স্টেটস এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন এজেন্সির (ইপিএ) মতে, শহরে যখন ফুটপাথ, ভবনসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক ভূমির পরিমাণ কমে যায়, তখনই তাপ দ্বীপের প্রভাব বাড়তে থাকে। এই প্রভাব বিদ্যুৎ খরচ (এসি ব্যবহার), বায়ুদূষণের মাত্রা এবং তাপদাহ-সম্পর্কিত অসুস্থতা ও মৃত্যু বাড়ায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, এ বছর এপ্রিলে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত ৭৬ বছরে এপ্রিলে রেকর্ড করা গড় তাপমাত্রার চেয়ে তিন ডিগ্রি বেশি।

চলতি বছর ইতোমধ্যে দীর্ঘতম তাপদাহ রেকর্ড করা হয়েছে।

শুধু উষ্ণতম নয়, এই এপ্রিল ছিল ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্কতমও। বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাত ছিল এক মিলিমিটার।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের গড় বৃষ্টিপাত ১৩৪ মিলিমিটার।

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৯৮১ সালের পর এটি ছিল দেশের সবচেয়ে শুষ্ক মাস।'

'এই সময়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এক মিলিমিটারও বৃষ্টি হয়নি। আর সিলেট বিভাগে সর্বোচ্চ ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে', বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Polythene ban: A litmus test for will and eco-innovation

Although Bangladesh became the first country in the world to announce a complete ban on the use of polythene bags in 2002, strict enforcement of the much-lauded initiative has only started taking shape recently.

16h ago