২৪ ঘণ্টায় সিলেট নগরীতে ৩৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি, প্রায় সব ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা

আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত আরও ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেট নগরীতে ৩৫৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়। আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আরও ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে নগরীর প্রায় সব ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ছবিটি সিলেটের বাগবাড়ি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: শেখ নাসির/ স্টার

দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেট নগরীতে ৩৫৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত আরও ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

তবে সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৪ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেটে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা। ছবিটি আজ সকালে নগরীর বাগবাড়ি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: শেখ নাসির/ স্টার

গত রাত ৩টার দিকে নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম ফেসবুকে লাইভে গিয়ে জানান যে তার বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।

যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমি আমার ওয়ার্ডের খালগুলো সব সময় পরিষ্কার রাখি কিন্তু আমার ওয়ার্ডের উপর দিয়ে নগরীতে উজানের পানি প্রবাহিত হয় তা সুরমা নদী দিয়ে দ্রুত নিচে নামতে পারে না। বন্যার হাত থেকে সিলেটকে বাঁচাতে অবিলম্বে সুরমা নদী খনন করা দরকার।'

প্লাবিত এলাকার মধ্যে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কাজলশাহ, শাহজালাল উপশহর, দরগামহল্লা, কালীঘাট, বাগবাড়ি, কানিশাইল, লামাপাড়া, লালা দীঘিরপাড়, মাছুদিঘীরপাড়, বাদামবাগিশা, শাহপরাণ, কুয়ারপাড়, সোবহানীঘাট, কামরপুর, শিবগঞ্জ, কালিঘাটসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রয়েছে।

সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দুটি প্রকল্পে ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ছবিটি আজ সকালে নগরীর বাগবাড়ি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: শেখ নাসির/ স্টার

আরও ১২২৮ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে যা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানের সাথে জলাবদ্ধতার ব্যাপারে কথা বলতে কল দিলেও তারা কল ধরেননি।

নগরীর তালতলা এলাকার বাসিন্দা সানাওর রহমান বলেন, 'সকাল ৩টার দিকে আমাদের বাড়িতে পানি ঢুকে যায় এবং অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। কখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে জানি না।'

সিলেটে বৃষ্টিতে ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। ছবিটি সকালে নগরীর বাগবাড়ি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: শেখ নাসির/ স্টার

এদিকে, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলা জলমগ্ন হয়ে ভোর ৫টা থেকে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, 'সকাল থেকে আমরা জলাবদ্ধ ছিলাম এবং বিদ্যুৎও বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হচ্ছে। আমরা জেনারেটর দিয়ে জরুরি পরিষেবা, আইসিইউ ও অপারেশন থিয়েটার চালাচ্ছি। পানি নেমে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে।'

Comments