‘পান্থকুঞ্জে ৫০ দিন’ পার্ক রক্ষায় নাগরিক-সাংস্কৃতিক সমাবেশ

পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষা আন্দোলনের ৫০ দিনে নাগরিক সমাবেশের বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

হাতিরঝিল জলাধার ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সংযোগ সড়ক বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের ৫০তম দিনে নাগরিক ও সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় পান্থকুঞ্জে এ সমাবেশ আয়োজন করে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারী অধিকারকর্মী শিরীন পারভীন হক। বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আমিরুল রাজিবের সঞ্চালনায় নাগরিক সমাবেশে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।

সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সদস্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান, লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. শায়ের গফুর ও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ। 

বক্তারা বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্যে পান্থকুঞ্জ পার্কের প্রায় ৪০ প্রজাতির দুই হাজার গাছ ধ্বংস করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের একটি র‌্যাম্প পান্থকুঞ্জ পার্ক হয়ে কারওয়ানবাজার গোলচত্বরের দিকে নামানো হবে এবং আরেকটি সংযোগ সড়ক পান্থকুঞ্জ পার্ক হয়ে পলাশী পর্যন্ত যাবে। এতে এসব এলাকার সামগ্রিক পরিবেশ বিনষ্টের পাশাপাশি প্রকল্পের আশেপাশের এলাকায় যানজট বাড়াবে। 

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, 'আধুনিক নগর পরিকল্পনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্লাইওভার ভেঙে এখন হাঁটার রাস্তা তৈরি করা হলেও বাংলাদেশ উল্টোপথে হাঁটছে। প্রস্তাবিত এক্সপ্রেসওয়ের ১৯টি র‍্যাম্প শহরের যানজট সমস্যা কোনোভাবেই কমাবে না বরং মোড়ে মোড়ে যানজট আরও বাড়াবে।'

লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা বলেন, 'বিগত সরকারের আমলে যেসব পিপিপি প্রজেক্ট হয়েছে সেগুলো আসলে "পাবলিক মানি টু প্রাইভেট পকেট" প্রজেক্ট। এই অর্থনৈতিক মডেলের বিরোধিতা এই সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা বিভিন্ন সময়ে করেছেন। এখন ক্ষমতায় এসে তারা যদি এসব পরিবেশ বিধ্বংসী ও জনবিরোধী প্রকল্প চালু রাখেন তাহলে বুঝতে হবে যে তারা আগের সরকারের লুণ্ঠনমূলক অর্থনৈতিক মডেল গ্রহণ করেছেন।'

বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. শায়ের গফুর বলেন, এ ধরনের প্রকল্পে যেসব দেশীয় পরামর্শক পেশাজীবী কাজ করছেন, তাদের পরিচয় জনগণের সামনে উন্মুক্ত করতে হবে।'

গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব বলেন, 'ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নেওয়া এসব প্রকল্প পুনর্বিবেচনা না করে বর্তমান সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকারের সঙ্গে বেইমানি করছে।'

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ বলেন, 'এই প্রকল্পের পরিবেশ সমীক্ষাসহ অন্যান্য প্রতিবেদন যারা প্রস্তুত করেছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রয়োজন।'

সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনা করেন ফারাহ দিবা তাসনিম, ছোট পরশ দেওয়ান, তেঁতুলতলা সহযাত্রী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, মুয়ীয মাহফুজ, বেতাল, তানভীর আনজুম ধ্রুব, গঞ্জে ফেরেশতা, নাঈম উল হাসান, আকিল আশরাফ, কেপি রাজিব, দ্য রোভার, কর্ণফুলী থেকে মিসিসিপি, আরব রায়হান ও আকাশ গায়েন। 

 

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

9h ago