অটোরিকশায় ২টি তক্ষক রেখে পালাল পাচারকারীরা
চট্টগ্রামে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেলে যাওয়া একটি পাটের ব্যাগ থেকে ২টি বিপন্ন প্রজাতির তক্ষক উদ্ধার করেছে বিজিবি ও বনবিভাগের যৌথ টহল দল।
আজ শুক্রবার মিরসরাই উপজেলার হেঁয়াকো সিকদারখীল এলাকার সড়ক থেকে তক্ষক ২টি উদ্ধার করা হয়।
বনবিভাগের করেরহাট রেঞ্জের রেঞ্জার জসিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সড়কে গাড়ি তল্লাশি করছিলাম। এরমধ্যে একটি অটোরিকশায় রাখা চটের ব্যাগ দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর সেটি তল্লাশি শুরু করলে ৩ জন ব্যক্তি ব্যাগ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।'
এই বন কর্মকর্তার ভাষ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে হেঁয়াকো-বারৈয়ারহাট সড়ক ব্যবহার করে তক্ষক পাচার করে আসছে বলে তারা তথ্য পেয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা নিয়মিত এই সড়কে অভিযান পরিচালনা করছিলেন।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল একই এলাকা থেকে ১টি তক্ষকসহ ৪ পাচারকারীকে আটক করে বনবিভাগ ও বিজিবি। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জসিম উদ্দিন বলেন, 'বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী আমরা ৩ পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কার্যক্রম শুরু করেছি। পাশাপাশি উদ্ধারকৃত তক্ষকগুলো করেরহাট সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।'
চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী বলেন, 'বন্যপ্রাণী পাচার রোধে সম্প্রতি আমরা আলাদা টহল টিম করে দিয়েছি। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বন্যপ্রাণী রক্ষায় পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের।'
তক্ষক একটি সরীসৃপ প্রজাতির পতঙ্গভুক নিশাচর প্রাণী। ওষুধপত্র তৈরি ও এইচআইভি প্রতিষেধক তৈরির গবেষণায় এর দেহাংশ ব্যবহৃত হয়। চামড়া দিয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন বিলাসসামগ্রী। এর জেরেই তক্ষক চোরাচালান চক্র বেশ সক্রিয় বাংলাদেশে। ফলে এর অস্তিত্বই বিপন্ন হতে বসেছে। প্রায়ই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তক্ষক উদ্ধারের খবর আসে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, জাপান, দক্ষিণ-চিন, উত্তর-অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেড় হাজার প্রজাতির তক্ষকের দেখা পাওয়া যায়।
Comments