আ. লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি চার্জ বন্ধ করতে চায়: সিপিডি

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি চার্জ থেকে বেরিয়ে আসতে চায় বলে একটি বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

আজ বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে 'বাংলাদেশে জ্বালানি রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: একটি নাগরিক ইশতেহার' শীর্ষক সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঘোষিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা কমানোর বিষয়টি রাখা হয়নি।

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান, বিদ্যমান জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক জ্বালানি ব্যবস্থার অতি আধিপত্যের অবসান, জ্বালানি মিশ্রণ ও বহুমুখীকরণ এবং বিদ্যুৎ আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তা অনুপস্থিত।

সেমিনারে বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বুয়েটের কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন এবং প্রধান উপদেষ্টার সাবেক বিশেষ সহকারী ড. এম তামিম; সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) পরিচালক  শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী; কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের (ক্লিন)প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী; অ্যাকশন এইডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ; ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) লিড এনার্জি অ্যানালিস্ট শফিকুল আলম।

বক্তারা বলেন, সরকারকে অবশ্যই বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। অন্যথায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অব্যাহত লোকসান থেকে মুক্তি পাবে না।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল বলেন, দেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য অর্জনই আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

তিনি বলেন, 'জনগণের দাবি বিদ্যুৎ পাওয়া। তারা আর বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা করতে চায় না এবং উৎপাদন খরচ দেখতে চায় না।'

তিনি আরও বলেন, কিছু ভুল থাকতে পারে, তবে আমরা সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আর নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে প্রধান বাধা হচ্ছে দেশে জমির স্বল্পতা।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে সামগ্রিক দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সরকার রাতারাতি বিদ্যুৎ রূপান্তরের জন্য তার পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারে না।

ড. তামিম বলেন, সরকার দিনের বেলা সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে সহজেই তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে পারে, তবে এ জাতীয় কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিকল্পনার আওতায় আগামী ২০ বছর ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু থাকবে।

শফিকুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানির ফলে দেশে ডলারের ঘাটতি বাড়ছে। আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে আমাদের দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে।

অ্যাকশন এইডের আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বেসরকারি উৎপাদকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ৫২ হাজার কোটি টাকা, ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher USD rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

40m ago