বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য আগামী ২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ: নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। স্টার ফাইল ছবি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য আগামী ২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এই ২ বছর আমাদের 'ব্যাঙলাফ' দিয়ে এগুতে হবে।

তিনি বলেন, 'আমরা এমনিতেই পিছিয়ে আছি। করোনাভাইরাস আসবে, সেটা তো কেউ জানতো না। সেজন্য আমাদের ২ বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো ইঞ্জিনিয়ার, কনসাল্টেন্ট, বিদেশি কর্মী কেউ তখন ছিল না। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো। গ্যাসের দাম উঠলো ১৬৭ ডলারে, যেটা এখন আমরা মাত্র ১১ ডলারে পাচ্ছি।'

আজ শনিবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটি তাদের মতিঝিলের কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে 'বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার: বঙ্গবন্ধুর দর্শন' শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এই ২ বছরের মধ্যে আমাদের লোকাল গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে হবে, কমপক্ষে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট আমাদের টার্গেট… আমরা ভোলার গ্যাস খুলনায় নিয়ে আসার জন্য পাইপলাইনের কাজে হাত দেবো। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের যত পুরোনো গ্যাসের পাইপলাইন আছে, সবগুলো নতুন করে বসাতে হবে, কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা লাগবে। এগুলোকে অটোমেটেড করতে হবে।'

সবগুলো কাজ একসঙ্গে করা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'বর্তমান সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেক কিছুই করেছে, আরও অনেক কাজ করছে।'

নসরুল হামিদ বলেন, 'অনেকে হয়তো জানেই না যে, আমরা সমুদ্রের নিচ দিয়ে ২৬০ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইন করেছি তেল খালাসের জন্য। মহেশখালী থেকে তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে পতেঙ্গায় আসবে। সেখান থেকে আরেকটি পাইপলাইনে করে ঢাকায় আসবে সেই তেল। আগে তেল খালাস করার জন্য যেখানে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতো, এখন মাত্র ১২ ঘণ্টায়ই এটা সম্ভব। আমাদের প্রতি বছর কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।'

'তেলের যে মজুদ ক্ষমতা, সেটা খুব শিগগির ৯০ দিনে দাঁড়াবে। যত ঝামেলাই হোক না কেন, যুদ্ধ লাগুক, ৩ মাসের মজুদ থাকবে আমাদের। এগুলো সবই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য', বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, '২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম পদক্ষেপ নেয় ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে। সেটা সফল হয়েছে। এখন আমাদের টার্গেট এই বিদ্যুৎ কীভাবে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করা যায়, কতটা সাশ্রয়ী মূল্যে আপনারা বিদ্যুৎ পেতে পারেন।'

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অনারারি অধ্যাপক বদরূল ইমাম। 

তিনি বলেন, 'দেশিয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর দর্শন। আমাদের এলএনজি আমদানিতে নির্ভরতা কমিয়ে দেশিয় জ্বালানি অনুসন্ধানে জোর দিতে হবে।'

বদরূল ইমাম বলেন, 'আমাদের দেশের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল এখনো অনুসন্ধান কার্যক্রমের বাইরে আছে। বিশাল সমুদ্রের কোনো সম্পদই আমরা এখনো আহরণ করতে পারিনি। আমাদের এখন পর্যন্ত যত গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে, সবগুলোই খুব সহজে পাওয়া যায় এমন গ্যাসক্ষেত্র। যেসব গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে আমাদের অনেক বেশি শ্রম দিতে হবে, সেগুলোতে এখনো আমরা হাত দিইনি।'

'গ্যাস ছাড়াও আমাদের কয়লা, খনিজ বালু, লোহার খনিসহ অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, সেগুলোতেও মনোনিবেশ করতে হবে', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

4h ago