লোডশেডিং

‘আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি, আমরা চেষ্টা করছি’

নসরুল হামিদ
বক্তব্য রাখছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

অর্থনৈতিক কারণে প্রায় ২ মাস আগে থেকে চেষ্টা করেও কয়লা, তেল ও গ্যাসের জোগান দিতে না পারায় বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো যাচ্ছে না। ফলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও প্রায় ২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

আজ রোববার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি লোডশেডিং বড় হওয়ায় পরিস্থিতিটা অসহনীয় হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আমরা চেষ্টা করছি এটা কত দ্রুত সমাধান করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে এটা সমাধানের চেষ্টা চলছে যে, কত দ্রুত অন্তত পায়রাতে (পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র) কয়লা নিয়ে আসা যায়। আমাদের ওখানে বর্তমানে অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। বড়পুকুরিয়াতে অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। আমাদের লিকুইড ফুয়েল যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো ছিল সেগুলোও প্রায় অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। যে কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের মাত্রাটা অনেক বেশি বেড়ে গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এখানে বিশেষ করে লোডশেডিংয়ের জায়গাটা বেড়ে গেছে। আমরা বারবার বলে আসছিলাম যে, আমাদের ফুয়েলগুলো—গ্যাস, কয়লা ও তেল; আমাদের দীর্ঘ সময় লাগছে এগুলো জোগান দিতে। এই কারণে কিন্তু আমাদের লোডশেডিংয়ের জায়গাটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। এখন যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, এটার আকারটা বেশ খানিকটা বড় হয়ে গেছে।'

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে নসরুল হামিদ বলেন, 'ঢাকার আশে পাশেসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গাতে, আমরা সকাল থেকে এটা মনিটর করছি। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা চেষ্টা করছি অচিরেই এই অবস্থা থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আমরা আশা করব, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিন সময়ের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এখানে থেকে বেরিয়ে আসার। কারণ আমাদের কয়লা, তেল, গ্যাসের জোগান দিতে হচ্ছে আবার ইন্ডাস্ট্রিতেও গ্যাস দিতে হচ্ছে। এই সমস্ত পরিস্থিতি একসঙ্গে এসেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আবহাওয়ার যে অবস্থা দেখছি আমরা, হিট ওয়েভের জায়গাটা বেড়ে গেছে। ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি চলে গেছে, কোনো জায়গায় ৪১ ডিগ্রি হয়ে গেছে। এই কারণে পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে মজুত ছিল পাওয়ার প্ল্যান্ট আমরা নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য প্রস্তুত রাখছিলাম সেটাও বিশেষ করে জ্বালানির কারণে আমরা দিতে পারছি না। কিন্তু পাওয়ার প্ল্যান্ট আমাদের নিজেদের কাছে আছে।'

সময় নির্ধারণ করে লোডশেডিং করার পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, 'আমরা এই মুহূর্তে সেভাবে যাচ্ছি না। আমরা কিছু জায়গায় কিছুটা লোডশেডিং করছি। সেগুলো থেকে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমাদের কয়লা, গ্যাস ও তেলের শর্টেজ, আমরা ঠিক মতো জোগান দিতে পারছি না। সেই কারণে এই ঝামেলাটা হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা খুব সাময়িক। এটা নিয়ে এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ইতোমধ্যে জোগানের চেষ্টা হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি অন্তত ২ সপ্তাহের মধ্যে আমরা একটি ভালো পরিস্থিতিতে যেতে পারব।'

জ্বালানিটা কেন দিতে পারছেন না এবং এই উদ্যোগটা কেন ১০-১৫ দিন আগে নিতে পারেননি—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা ২ মাস আগে থেকে চেষ্টা করছিলাম। তার কারণ এগুলো পরিস্থিতি আগে থেকে সামাল না দিলে সমাধান হয় না। আমরা জানতাম এ রকম একটা পরিস্থিতিতে যেতে পারে। সে রকম সমাধান নিয়ে আমরা চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সার্বিকভাবে আমাদের অনেক কিছু দেখতে হয়। অর্থনৈতিক বিষয় আছে, সময় মতো এলসি (আমদানি ঋণপত্র) খোলার বিষয় আছে, সময় মতো জ্বালানি পাওয়ার বিষয় আছে। সেই বিষয়গুলো কিন্তু আমাদের একসঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আশার বাণী হলো, সামাল দেওয়ার একটা ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আমাদের সেই সময়টুকু দিতে হবে। ১-২ সপ্তাহ কিছুটা কষ্ট ভোগ করতে হবে সবাইকে।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা দেখছি প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়ার লোডশেডিং হচ্ছে। আমাদের আশা আমরা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে পারব।'

Comments

The Daily Star  | English

Foreign adviser’s china tour: 10 extra years for repaying Chinese loans

Beijing has agreed in principle to extend the repayment period for Chinese loans and assured Dhaka it will look into the request to lower the interest rate to ease Bangladesh’s foreign debt repayment pressure.

4h ago