আর কতদিন অন্যের বাড়িতে থাকা যায়, বন্যায় ঘরহারা এক বর্গাচাষির প্রশ্ন

গত ২২ অগাস্ট মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে বাড়িঘর-মাঠের তিন বিঘা জমির ফসল—সব হারিয়েছেন কবির। এখন পরিবারের ৮ সদস্য এবং গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে।
বন্যায় নিজের ঘর হারিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন ৬৫ বছরের বর্গাচাষি কবির আহমেদ। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

অগাস্টের ভয়াবহ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফেনীতে। অনেক মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ ও সামান্য সহযোগিতা মিললেও এখনো সরকারিভাবে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়নি।

এবারের বন্যায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়াদের মধ্যে একজন ৬৫ বছরের বর্গাচাষি কবির আহমেদ। তার বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে।

গত ২২ অগাস্ট মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে বাড়িঘর-মাঠের তিন বিঘা জমির ফসল—সব হারিয়েছেন কবির। এখন পরিবারের ৮ সদস্য এবং গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে। সহায়-সম্বল সব হারিয়ে শুধুই কেঁদে চলেছেন এই বৃদ্ধ।

শনিবার সকালে জগৎপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মাত্র দুই কিলোমিটারের মধ্যে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে ১৩-১৪ জায়গায়। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবারের সবাই কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কবির বলেন, ২২ অগাস্ট বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে তার দুইটি টিনের ঘর ভেঙে যায়। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোনো রকমে প্রাণে বেঁচেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কবির একজন বর্গাচাষি। অন্যের জমি চাষ করেন তিনি।

কবির জানান, বন্যার আগে চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এতে বিনিয়োগ করতে হয় ৩০ হাজার টাকা। এখন জমিতে একটিও রোপা অবশিষ্ট নেই। নেই মাথা গোঁজার ঠাই।

'বন্যার মধ্যে যে ত্রাণ পেয়েছি সেটাও শেষ হয়ে আসছে। বেসরকারিভাবে অনেকে সাহায্য করলেও কেউ ঘরবাড়ি তৈরি করতে কিছু দেয়নি। আর কতদিন অন্যের বাড়িতে থাকা যায়', কাঁদতে কাঁদতে বলেন কবির।

ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে এবার বন্যায় উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জগৎপুরের বাসিন্দারা।

পূর্ণবাসনের বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার সময় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এখন ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বেসরকারিভাবে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সাহায্য করছে। সরকারিভাবে এখনো পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

7h ago