সিলেটের সীমান্ত এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নগরীতে অবনতি

কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর ও কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট নগরীর উপশহর এলাকার অধিকাংশ সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। অনেক পরিবার বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

'বৃহস্পতিবার থেকে শহরে পানি ঢুকতে শুরু করে। গতকাল কম ছিল, তবে আজ আমার বাড়ির সামনে ৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। জানি না এটা কতদিন চলবে।'

কথাগুলো বলছিলেন সিলেট নগরীর মাছিমপুরের বাসিন্দা সুনীল সিংহ।

তার মতো একইরকম কথা বলেছেন শহরের অধিকাংশ মানুষ।

ভারত থেকে উজানের ঢলে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিলেটের ৪ উপজেলাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। 

তবে সীমান্ত এলাকার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই পানি নামতে শুরু করেছে। তবে সুরমা নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সিলেট নগরী প্লাবিত হচ্ছে।

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর ও কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে সিলেট নগরীর সীমানা রেখার প্রায় ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।'

সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, তেররতন, তালতলা, জতরপুর ও উপশহরসহ নগরীর বিভিন্ন খাল দিয়ে প্রবেশ করছে। এতে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর প্লাবিত হচ্ছে। সুবহানীঘাট মাদ্রাসাতেও পানি উঠেছে। মাদ্রাসার সামনের মাঠটি পুকুরে পরিণত হয়েছে।

সিলেটের ফায়ার সার্ভিস ও নগরীর তালতলায় সিভিল ডিফেন্স স্টেশনও প্লাবিত হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেয়।

মাছিমপুর এলাকার আরেক বাসিন্দা সাহাদাত হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুরমা নদীর পানি শহরের ড্রেনেজ খালে প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি করছে।'

ছবি: শেখ নাসির/স্টার

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি সভা করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'প্যানেল মেয়র মখলিছুর রহমান কামরান এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সভায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের জরুরি সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নগরবাসীর জরুরি সেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (০১৯৫৮২৮৪৮০০) খোলা হয়েছে এবং পরিস্থিতি খারাপ হলে রান্না করা খাবার পরিবেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'

কাউন্সিলরদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নগরীতে ইতোমধ্যেই বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে চার হাজার পরিবার। 

সিলেট সিটি করপোরেশন তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করছে বলেও জানান সাজলু লস্কর।

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh China bilateral trade

PM’s visit to China: Dhaka to seek $20b fresh loans from Beijing

Bangladesh will seek fresh loans amounting to $20 billion during Prime Minister Sheikh Hasina’s upcoming visit to China, which Beijing hopes would be a “game changer” in the bilateral relationship.

2h ago