চট্টগ্রামে বন্যা: ডাকাতের ভয়ে রাত পার

চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির ৯ আগস্টের চিত্র। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

বন্যার পানির সঙ্গে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা ডাকাতের ভয়ে নির্ঘুম রাত পার করছেন। সশস্ত্র ডাকাত ট্রলার নিয়ে দূরবর্তী গ্রাম লুটপাটের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের ভাষ্য, ত্রাণ দেওয়ার নাম করে গভীর রাতে বাড়িতে হানা দিয়ে গরু, ছাগল ও নগদ অর্থ লুট করার চেষ্টা করছে এই ডাকাত দল।

যদিও পুলিশ দাবি করেছে যে, তাদের কাছে ডাকাতির কোনো তথ্য নেই। তবে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডাকাতির তথ্য পেয়েছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব নয়।

সাতকানিয়া ও লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন টানা বর্ষণ ও উজানের পানিতে সৃষ্ট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলে পানিবন্দি হয়ে লাখো মানুষ। বন্যার পানিতে সাতকানিয়া ও লোহাগড়ায় বিদ্যুৎ লাইন ও সাব-স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে হাজারো মানুষ রাত পার করছেন অন্ধকারে।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, দোহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া ও বাঁশখালী উপজেলাসহ ৫টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সাতকানিয়া ও লোহাগড়ার কিছু কিছু ইউনিয়নে পানি নেমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা।

সাতকানিয়ার স্থানীয় লোকজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, বুধবার দিবাগত রাতে নৌকাযোগে ৬ নম্বর ডেমশা ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী নলুয়া ইউনিয়নের দুটি বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাতরা হামলা চালায়। তাদের অভিযোগ, বন্যার সুযোগ নিয়ে নৌপথ ব্যবহার করে গ্রামাঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে বেশ কিছু অজ্ঞাত ডাকাত দল। তারা প্রধানত গৃহপালিত পশু ও নগদ অর্থ টার্গেট করে বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে।

৬ নম্বর ডেমশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেদোয়ান উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে একদল ডাকাত ডেমশা ইউনিয়নের প্রবাসী দেলোয়ারের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে। নৌকার আওয়াজ শুনে স্থানীয় লোকজন তাদের ত্রাণবাহী নৌকা মনে করে। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় চ্যালেঞ্জ করলে মসজিদ থেকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তবে ডাকাতরা সাঙ্গু নদী দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।'

তার দাবি, এর এক ঘণ্টা পর নলুয়া ইউনিয়নের বিল্লা পাড়ায় রফিক নামের একজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় দলটি।

রেদওয়ান আরও বলেন, 'ডাকাতরা মূলত গরু ও নগদ টাকা লুট করছে।'

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) সুদীপ্ত সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু ঘটনার বিষয়ে জেনেছি। সরাসরি কেউ কিছু বলেনি। এমনকি কেউ পুলিশ বা জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনাটি জানায়নি। এটা সত্যি যে সময়টা সবার জন্য ভালো নয়। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।'

'রাতে ত্রাণ বিতরণের জন্য বিভিন্ন দল বা মানুষ নৌকায় করে বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। স্থানীয় লোকজন ভেবেছে ডাকাত পড়েছে। আমরা ত্রাণ বিতরণকারীদের সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তাদের কার্যক্রম শেষ করতে বলেছি', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

What's causing the unrest among factory workers?

Kalpona Akter, labour rights activist and president of Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation, talks to Monorom Polok of The Daily Star about the recent ready-made garments (RMG) workers’ unrest.

8h ago