৯৯৯-এ কল, মেঘনার বালুচর থেকে বর-কনেসহ ৩৭ জনকে উদ্ধার
জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে নরসিংদীতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবল থেকে মেঘনা নদীর বালুচরে আটকে পড়া নবদম্পতিসহ ৩৭ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল রাত দেড়টার দিকে সদর উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের পঞ্চবটী গ্রামের দক্ষিণ অংশের মেঘনা নদী থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। নরসিংদী করিমপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ি তাদের উদ্ধার করে।
করিমপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরিদ আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'বরযাত্রীবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন থেকে নরসিংদী শহরের দিকে যাচ্ছিল। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নৌকাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বালুচরে আটকে যায়। প্রায় ১০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর আমরা ওই নৌকা থেকে নবদম্পতি, নারী, শিশুসহ মোট ৩৭ জনকে উদ্ধার করি।'
জানা গেছে, গতকাল দুপুরে নরসিংদী বাজার থেকে বরসহ ৩৫ জনকে নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আলোকবালীতে যান বরপক্ষ। পরে বিকাল ৫টার দিকে কনেকে নিয়ে ওই নৌকায় করে ফিরছিলেন তারা। তখন নৌকায় কনেসহ আরও ২ জন যোগ হয়ে মোট যাত্রীর সংখ্যা হয় ৩৭ জন। কিন্তু, মাঝনদীতে আসার পরই প্রবল বাতাস বইতে থাকে। এ সময় বাতাসের তোড়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে নৌকাটি। একপর্যায়ে নৌকাটি শ্রীনগর ইউনিয়নের পঞ্চবটী গ্রামের দক্ষিণ অংশে কচুরিপানায় আটকে বালুচরে থেমে যায়। সেখান থেকে বেরোতে না পেরে বরের মামা বাচ্চু মিয়া জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে কল করেন। তিনি করিমপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।
নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরিদ আহমেদ বলেন, 'এরপরই নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা প্রবল ঝড়ো বাতাসের মধ্যেই উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত ১টার দিকে বালুচরে আটকে থাকা ওই নৌকার খোঁজ পান তারা। পরে ওই নৌকাসহ ৩৭ যাত্রীকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়।'
বরের মামা বাচ্চু মিয়া বলেন, 'এমন পরিস্থিতিতে কনেপক্ষ আমাদের থেকে যেতে বলেছিল। কিন্তু আমরা সবাই ভেবেছিলাম, চলে আসতে পারব। মাঝনদীতে আসার পরই প্রবল ঝড়ো বাতাস শুরু হলে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমাদের নৌকাও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। জনমানবহীন ওই চরের মধ্যে এই ১০ ঘণ্টা সময় আমরা কীভাবে পার করেছি, আমরাই জানি। পুলিশের সহায়তায় আমরা বেঁচে ফিরতে পেরেছি, এটাই বড় বিষয়।'
নরসিংদী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো আল আমিন মিয় বলেন, 'উদ্ধারের পর রাতে তাদের নৌ-ফাঁড়িতে রাখা হয়। সেখান থেকে সকালে সবাই নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন, সবাই সুস্থ আছেন।'
Comments