প্রতিটি নিঃশ্বাসে আয়ু কমে যাচ্ছে: সোহেল রানা

সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের অভিনয়শিল্পী সোহেল রানা। তিনি এদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা ওরা ১১ জন-এর প্রযোজক। নায়ক হিসেবে যেমন সফলতা পেয়েছেন, পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবেও সমান সফল তিনি। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। গতকাল ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল সোহেল রানার ৭৬তম জন্মদিন।

আজ সকালে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন খ্যাতিমান নায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানা।

জীবনের ৭৬ বছর পার করে ৭৭ বছরে পা দিলেন, আপনার অনুভূতি জানতে চাই...

বেঁচে আছি, এজন্য সব কৃতজ্ঞতা মহান আল্লাহর প্রতি। প্রতিটি নিঃশ্বাসে আয়ু কমে যাচ্ছে। আমার সময়ের অনেকেই আজ বেঁচে নেই। তাদের কথা মনে পড়ে। আগের দিনের বিশ্বাসগুলো এখন আর নেই। যে অবস্থানে আছি, এভাবেই যেন সৃষ্টিকর্তা নিয়ে যান । সুস্থ থাকতে থাকতে চলে যেতে চাই। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকতে চাই না। কাউকে কষ্ট দিতে চাই না।

একজন নায়ক ছাড়াও আপনি বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং একসময়ের নামি ছাত্রনেতা, একজীবনের বড় অর্জন কী?

মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি অনেক। মানুষের ভালোবাসা পাওয়াটা জীবনের বড় অর্জন। এর চেয়ে বড় অর্জন আর কী হতে পারে? আর কী চাই? আমি মনে করি সৃষ্টিকর্তা এটুকু আমার জন্য লিখে রেখেছিলেন। যা পাইনি তা লিখে রাখেননি। আমি একজন সাধারণ মানুষ। কিন্তু কত মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ পেয়েছি। আমি তো জীবনে তেমন কিছু করিনি, শুধু সিনেমায় অভিনয় করেছি। আমার সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, বিনিময়ে মানুষ আমাকে ভালোবেসেছে। মানুষের ভালোবাসা সবচেয়ে বড় অর্জন।

কোনো দুঃখবোধ আছে কি?

না। যা পেয়েছি আমি খুশি। আমার কোনো দুঃখবোধ নেই। আমার কোনো না পাওয়ার কষ্ট নেই। আমার জীবনে যা কিছু পেয়েছি আমি সুখী। আমি তো কাউকে কিছু দিতে পারিনি, কিন্তু পেয়েছি অনেক। সব মানুষ নেয়, দেওয়ার মানুষ কম। কী এমন দিয়েছি? অভিনয় করেছি ভালোবাসা থেকে। ছাত্র রাজনীতি করেছি দেশের জন্য। যুদ্ধ করেছি দেশকে স্বাধীন করব বলে। দুঃখবোধ কেন থাকবে? মানুষ আমাকে এত দিয়েছে, তারপরও দুঃখ থাকবে? ৫০ বছর কাজ করেছি সিনেমায়, বিনিময়ে পেয়েছি ভালোবাসা ও ভালোবাসা।

এই সময়ে এসে আপনার চাওয়া?

সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কোনো কিছু চাওয়ার নেই। সম্মান, ভালোবাসা, আশীর্বাদ সব পেয়েছি। তারপরও কিছু চাওয়া থেকে যায়। সেসব নাই বা বলি। ১৯৬৫ সালে ছাত্ররাজনীতি করতে গিয়ে আমি জেল খেটেছি। একজীবনে কোনোদিনও ভাবিনি অভিনেতা হব, অথচ আমি তাই হয়েছি। সারা পৃথিবীতে যত বাঙালি আছে, আমাকে চেনে ও ভালোবাসে। আরও বহু বছর বাঁচি তা চাই না। ৫ থেকে ৭ বছর বাঁচতে চাই। কষ্ট না দিয়ে চলে যেতে চাই।

আপনার শরীর এখন কেমন?

এই বয়সে যতটুকু থাকার আছে। রিং পরিয়েছিলাম, ওটার জন্য নিয়মিত চেকআপ করাতে হয়। চোখের সমস্যা কিছুটা আছে। আগামী মাসে আবার সিঙ্গাপুর যেতে হবে। সবার দোয়া চাই। পরম করুণাময়ের কাছে রহমত চাই।

জন্মদিন কীভাবে কেটেছে?

বাড়িতে ছিলাম। দিনভর মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। প্রচুর মানুষ ভালোবাসা জানিয়েছেন। কেউ কেউ বাসায় এসেছেন। সুন্দরভাবে কেটেছে দিনটি।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

Activities of certain entities, and activities supporting them can now be banned

2h ago