পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনী

পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনী
পূর্ববাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর ভিমরুলি। ছবি: আহমাদ ইশতিয়াক

খালের দুধারে পেয়ারা বাগান। সারিবদ্ধ পেয়ারা গাছের দুপাশে নালার মতো বয়ে গেছে চিকন খাল। ভেতরে কেউ থাকলে বাইরে থেকে সহজে কারো উপস্থিতি টের পাওয়া যায় না। ঝালকাঠি, বরিশাল ও পিরোজপুরের তিনটি থানা জুড়ে বিস্তৃত এই পেয়ারা বাগানই মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হয়ে উঠেছিল এক দুর্ভেদ্য ঘাঁটি।

বিপ্লবী কমিউনিস্ট নেতা সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বাধীন পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা দক্ষিণাঞ্চলের এসব পেয়ারা বাগানকে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে এক বিস্তৃত মুক্তাঞ্চলে পরিণত করেছিলেন। পেয়ারা বাগান ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধকালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাহিনীটি পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিল।

পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর উপরে বিস্তারিত প্রতিবেদনের কাজে ডেইলি স্টারের এই প্রতিবেদক চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরিশালের একাধিক উপজেলা সফর করেন। এ সময় পেয়ারা বাগানের যুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অন্তত ১০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা হয়। একইসঙ্গে কথা হয় এই বাহিনীর হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ করা কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে।

মহিউদ্দিন আহমদের 'লাল সন্ত্রাস' ও মুনীর মোরশেদ রচিত 'সিরাজ সিকদার ও পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি ১৯৬৭-১৯৯২' বই সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে 'পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলন' গড়ে তোলেন বামপন্থী ছাত্রনেতা সিরাজ সিকদার।

সিরাজ সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

১৯৭১ সালের ৮ জানুয়ারি 'স্বাধীন পূর্ববাংলা কায়েম করুন' শীর্ষক একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেছিলেন তারা। যুদ্ধ শুরু হলে ১৮ এপ্রিল ঢাকা ছেড়ে বরিশালে চলে যান সিরাজ সিকদার। বরিশালে অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো পরিবেশ একমাত্র পেয়ারা বাগানে আছে বিবেচনা করে ঝালকাঠির কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের রুনসী গ্রামে আশ্রয় নেন তিনি।

মার্চের শুরু থেকেই ঝালকাঠির বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয়েছিল। এর মধ্যে শ্রমিক আন্দোলন নেতা মুজিব মেহেদীর তত্ত্বাবধানে পিপলদিয়া স্কুল ও রমানাথপুর স্কুলেও প্রশিক্ষণ চলছিল। বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মিলু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিরাজ সিকদার আসার পর আমরা পালবাড়িতে ক্যাম্প করি। ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন সেলিম শাহ নেওয়াজ। '

অন্যদিকে ঝালকাঠি থানার সেকেন্ড অফিসার শফিউল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঝালকাঠি থানার অস্ত্রাগার থেকে সংগৃহীত অস্ত্র দিয়ে থানার মাঠে যুবকদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের কাজ চলছিল।

প্রশিক্ষণের এক পর্যায়ে পেয়ারা বাগানে আশ্রয়ের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে খাদ্যসামগ্রী মজুদ করেন বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, 'আমরা সংগ্রহের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্যও খাদ্যগুদাম উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম।'

২৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ঝালকাঠি শহরে প্রবেশ করলে শফিউল ইসলামের নির্দেশে সংগৃহীত ৩৬টি রাইফেল নিয়ে প্রশিক্ষণরত শতাধিক ছাত্র-যুবক ও আওয়ামী নেতাকর্মী কীর্ত্তিপাশা হাইস্কুলে অবস্থান নেন।

শফিউল ইসলাম পরে 'কমরেড সিরাজ সিকদার ও মুক্তিযুদ্ধের প্রথম যুদ্ধ' শিরোনামে একটি বই লিখেছেন। এই বই সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানিদের জাতীয় শত্রু বিবেচনা করে ২৯ এপ্রিল কীর্ত্তিপাশা স্কুলে পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে ঐক্যমতের ভিত্তিতে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়।

মুনির মোরশেদ সম্পাদিত '৭১ এর বিপ্লবী মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ঘাঁটি এলাকা পেয়ারাবাগান' বই সূত্রে জানা যায়, ৭১ এর ৩০ এপ্রিল ঝালকাঠির ভিমরুলি স্কুলে পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশেই মূলত বাহিনীর নাম 'পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনী' রাখা হয়। একইসঙ্গে বাহিনী পরিচালনার জন্য গঠন করা হয় সর্বোচ্চ সামরিক পরিচালকমণ্ডলী।

২ মে পেয়ারা বাগানকে ১ নম্বর ফ্রন্ট এরিয়া ও ভিমরুলিকে সদর দপ্তর করে পূর্ববাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর কেন্দ্রীয় ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। প্রশিক্ষণের জন্য ভিমরুলিতে খোলা হয় সামরিক স্কুল। পেয়ারা বাগানকে ৮টি গেরিলা সেক্টরে ভাগ করা হয়। এ সেক্টরগুলো ছিল কীর্ত্তিপাশা, শতদশকাঠী, আটঘর, বাউকাঠী, পশ্চিম জলাবাড়ি, পূর্ব জলাবাড়ি কুড়িয়ানা ও আতা। প্রতিটি সেক্টরে একজন কমান্ডার ও একজন রাজনৈতিক কমিশনারের অধীনে এক গ্রুপ বীর মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করতেন।

বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আলম খসরু বলেন, 'প্রতিটি সেক্টরে রাজনৈতিক কমিশনার ছিলেন প্রধান। কমান্ডারের দায়িত্ব ছিল তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত প্রণয়ন।'

বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আলম খসরু। ছবি: আহমাদ ইশতিয়াক

মুক্তিযুদ্ধকালীন পেয়ারা বাগানে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ৭ মে ঝালকাঠির হেমানন্দকাঠিতে পাকিস্তানি লঞ্চে আক্রমণ। এই যুদ্ধে ২৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল।

বাহিনীর একাধিক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানি সেনাবাহী একটি লঞ্চ নিয়মিতভাবেই পেয়ারা বাগানের গ্রামগুলোতে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ চালাচ্ছিল। গোয়েন্দা মারফতে খবর পেয়ে লঞ্চটি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশীদ আলম ও ঝালকাঠি থানার সেকেন্ড অফিসার শফিউল ইসলাম অতর্কিত আক্রমণের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ করেন। ৭ মে সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা খালের দুপাশে অবস্থান নেন। দুপুর ৩টার দিকে লুটপাট শেষে ফেরার পথে পাকিস্তানিদের লঞ্চটি অ্যামবুশ পজিশনে ঢোকামাত্রই বীর মুক্তিযোদ্ধা গুলিবর্ষণ শুরু করেন। আক্রমণে প্রথমেই লঞ্চের সারেং নিহত হয়।

বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, 'লঞ্চ আমাদের অবস্থানে ঢোকামাত্রই যার সিগন্যাল দেওয়ার কথা তিনি উত্তেজনাবশত গুলি করে বসেন। এক পর্যায়ে ওরাও গুলি শুরু করে। আমাদের গুলিতে টিকতে না পেরে লঞ্চটি খালের ওপর পাশে গিয়ে পড়ে।'

বাহিনীর আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর জব্বার বলেন, 'আমরা কৌশলী হয়ে এমন জায়গায় অবস্থান নিয়েছিলাম, যেখান থেকে আমরা গুলি করলে ওদের গায়ে লাগলেও, ওদের সব গুলি আমাদের মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছিল।'

১৯৭১ সালের ৭ মে এই স্থানেই পাকিস্তানি লঞ্চে আক্রমণ চালিয়েছিলেন পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এই যুদ্ধে ২৪ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। হেমানন্দকাঠি, ঝালকাঠি। ছবি: আহমাদ ইশতিয়াক

পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন ছিল ২৫মে বরিশালের বানারীপাড়া থানা আক্রমণ। ২৫ মে খুরশিদ আলম, ফিরোজ কবির, সেলিম শাহনেওয়াজ ও জিয়াউলের নেতৃত্বে বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে থানা আক্রমণ করেন।

প্রথমে মুক্তিযোদ্ধারা থানায় টহলরত পুলিশদের ডিসপেনসারিতে বন্দি করে অস্ত্রাগার দখল করতে যান। এ সময় বাকি পুলিশদের সঙ্গে তাদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়।

বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আলম খসরু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফিরোজ কবিরের ট্রুপস ঢুকতে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা থানা দখল করতে না পারলেও ৮টি রাইফেল, রিভালভার, বেশকিছু গুলি পেয়েছিলাম।'

এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী এক মাসে পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা পেয়ারা বাগানের ৭২ বর্গ মাইল এলাকা মুক্ত করেছিলেন।

একাধিক যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনী পেয়ারা বাগানের অভ্যন্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্ত অবস্থান বুঝতে পেরে পেয়ারা বাগানের চারদিকে এক ব্রিগেড সেনা মোতায়েন করে।

ছারছীনা পীর আবু সালেহ তার মাদ্রাসার ছাত্রদের পেয়ারা বাগান কাটার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে পাকিস্তানি সেনারা বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েক হাজার লোক ধরে এনে পেয়ারা বাগান কাটা শুরু করে। পাকিস্তানি সেনারা কুড়িয়ানা-গাবখান-বাউকাঠী ও সন্ধ্যা নদীতে ৩৫টি স্পিডবোট ও দুটি গানবোট নিয়ে নিশ্ছিদ্র টহল বসায়।

টানা কয়েকদিন পেয়ারা বাগান কাটার এক পর্যায়ে বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের হাতের মুঠোয় চলে আসছিলেন।

এমন অবস্থায় ৩ জুন পেয়ারাবাগানের ঘাঁটি এলাকায় দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে দলের নাম পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলনের বদলে পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি রাখা হয়।

পাকিস্তানি সেনাদের সার্বক্ষণিক নজরদারির মাঝেই ৫ জুন রাতে পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর এক সভায় নদী তীরবর্তী একটি পাকিস্তানি ক্যাম্প আক্রমণের মধ্য দিয়ে খরস্রোতা সন্ধ্যা নদী পেরোনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মিলু বলেন, '৬ জুন রাতে আমরা পাকিস্তানিদের কুড়িআনা ক্যাম্প আক্রমণ করি। এ সময় সমস্ত স্পিডবোট ও গানবোট হামলার স্থানে চলে আসে।'

এই ফাঁকে সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অসংখ্য ছিপ নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।

দেশব্যাপী পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধকালে পেয়ারা বাগান ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা। দেশব্যাপী ৫টি ফ্রন্ট এরিয়া ও দুটি আঞ্চলিক ফ্রন্ট গঠন করেছিল পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনী।

বাহিনীর ১ নম্বর ফ্রন্ট এরিয়া ছিল পেয়ারাবাগান, ২ নম্বর ফ্রন্ট এরিয়া ছিল বরিশালের উত্তরাঞ্চলে। রামকৃষ্ণ পাল ও খুরশিদ আলম খসরুর নেতৃত্বে বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা বরিশালের গৌরনদী থানাসহ বাবুগঞ্জ, মুলাদি, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ, বামনা, গলাচিপা, মাদারীপুর সদর, কালকিনি, পালং, শরীয়তপুরের নড়িয়া, জাজিরা অঞ্চলে যুদ্ধ করেছিলেন।

বাহিনীর ৩ নম্বর ফ্রন্ট এরিয়া ছিল ভোলাতে। এই ফ্রন্টে বাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার ও কমান্ডার ছিলেন যথাক্রমে জিয়াউল কুদ্দুস ও লাল গাজী। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ৩ নম্বর ফ্রন্টের মুক্তিযোদ্ধারা লালমোহন থানা ও চরফ্যাশন থানা আক্রমণ করে দখলে নেন।

এই ফ্রন্টের অন্যতম যুদ্ধ ছিল ১৬ অক্টোবরের ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলার যুদ্ধ। এই যুদ্ধে স্থানীয় সিদ্দিক বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন জাতীয় মুক্তিবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

৫ ঘণ্টাব্যাপী চলা দেউলার যুদ্ধে নিহত হন অন্তত ২৯ জন পাকিস্তানি সেনা ও থানার ওসিসহ ২ জন পুলিশ।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মুন্সিগঞ্জকে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনী গঠন করেছিল ৪ নম্বর ফ্রন্ট এরিয়া। এই ফ্রন্টের পরিচালক ছিলেন মজিদ ওরফে ইঞ্জিনিয়ার নাসির। মে মাসের শেষদিকে শাহজাহান তালুকদারের নেতৃত্বে লৌহজংয়ে পাকিস্তানি দালাল উচ্ছেদের মাধ্যমে এই অঞ্চলের বাহিনীর গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে।

পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর ৫ নম্বর ফ্রন্ট ছিল পাবনা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের বেশ কয়েকটি থানা জুড়ে। এই অঞ্চলে বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা একাধিক থানায় অপারেশন চালিয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধকালে মাদারীপুর, সাভার ও মানিকগঞ্জে বাহিনীর দুটি পৃথক ফ্রন্ট এরিয়া ছিল। মাদারিপুরে প্রথমে বরিশাল অঞ্চলের ২নম্বর ফ্রন্ট এরিয়ার অধীনে থাকলেও একপর্যায়ে মাদারীপুরে পৃথক ফ্রন্ট এরিয়া গঠন করা হয়।

অন্যদিকে সাভার ও মানিকগঞ্জ জুড়ে গঠিত হয়েছিল বাহিনীর সাভার ফ্রন্ট এরিয়া। জুলাই মাস থেকে এই অঞ্চলে ফ্রন্ট এরিয়ার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন সামিউল্লাহ আজমি। এছাড়া ময়মনসিংহের একাংশে এবং নরসিংদীতে বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা একাধিক অপারেশন চালিয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সমগ্র দেশব্যাপী শতাধিক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তিবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

6h ago