বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে স্টাইলিশ নায়ক জাফর ইকবাল: অঞ্জনা

নায়ক জাফর ইকবাল
নায়ক জাফর ইকবাল ও অঞ্জনা। ছবি: সংগৃহীত

এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বাংলা চলচ্চিত্রের স্টাইলিশ নায়কদের তালিকার প্রথম দিকে থাকবেন জাফর ইকবাল। তিনি একাধারে নায়ক, গায়ক ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ৭০ ও ৮০'র দশকের দর্শকের মনে আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। আজ তার ৩১তম প্রয়াণ দিবস।

১৯৯২ সালে ৮ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তার বোন কণ্ঠশিল্পী শাহানাজ রহমতুল্লাহ এবং বড় ভাই সংগীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজ। তাদের কেউ আর আমাদের মাঝে বেঁচে নেই।

নায়ক জাফর ইকবালের প্রয়াণদিনে অভিনেত্রী অঞ্জনা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিনি ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে স্টাইলিশ ও সুদর্শন নায়ক। ফ্যাশন আইকন বলতে যা বোঝায় সেটা ছিলেন তিনি। অনেকেই জানে না জাফর ইকবাল কী দারুণ রান্না করতে জানতেন। তার বাসায় কেউ গেলে নিজে রান্না করে খাওয়াতেন।'

'এই নায়কের সঙ্গে ১৬টি সিনেমায় জুটি হয়ে অভিনয় করেছি। আমাদের অভিনীত সিনেমাগুলো হলো ঈদ মোবারক, অংকুর, অংশীদার, আশীর্বাদ, প্রতিরোধ, মহারাজা, অগ্নিশপথ, রাজ তিলক, একি রাস্তা, বিস্ফোরণ, চোরের ছেলে, ইন্সপেক্টর, আখেরি ফয়সালা, শেষ দেখা, খুনি ও সুখ। তার প্রয়াণদিনে অনেক কথা মনে হচ্ছে। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক প্রিয় নায়ক,' বলেন তিনি।

জাফর ইকবাল অভিনীত প্রথম সিনেমা 'আপন পর'। খান আতাউর রহমান পরিচালনা করেছিলেন সিনেমাটি। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে তার নায়িকা ছিলেন কবরী। এই ছবির 'যা রে যাবি যদি যা' গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ৭০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে 'সূর্য সংগ্রাম' সিনেমাতে ববিতার বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া 'মাস্তান' সিনেমার বদৌলতে ড্যাশিং নায়কের পরিচিতি পান জাফর ইকবাল। রোমান্টিক নায়ক হিসেবে পরিচিতি পান 'নয়নের আলো' সিনেমার মাধ্যমে।

সর্বমোট ১৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জাফর ইকবাল। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমা হলো- অবুঝ হৃদয়, ভাই বন্ধু, অবদান, প্রেমিক, সাধারণ মেয়ে, ফকির মজনু শাহ, দিনের পর দিন, বেদ্বীন, অংশীদার, মেঘ বিজলী বাদল, নয়নের আলো, সাত রাজার ধন, আশীর্বাদ, অপমান, এক মুঠো ভাত, গৃহলক্ষ্মী, ওগো বিদেশিনী, প্রেমিক, নবাব, প্রতিরোধ, ফুলের মালা, সিআইডি, মর্যাদা, সন্ধি, বন্ধু আমার, উসিলা ইত্যাদি।

ব্যক্তিজীবনে জাফর ইকবাল বিয়ে করেছিলেন সোনিয়া নামের একজনকে। এই দম্পতির দুই ছেলে আছে। গায়ক হিসেবেও তিনি ছিলেন অনন্য। ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে বন্ধুদের নিয়ে 'রোলিং স্টোন' ব্যান্ড গড়েছিলেন। এলভিস প্রিসলি তার খুব প্রিয় ছিল। সংগীত পরিচালক ভাই আনোয়ার পারভেজের সুরে 'বদনাম' সিনেমার 'হয় যদি বদনাম হোক আরও' গানটি দিয়ে চলচ্চিত্র প্লেব্যাকে অভিষেক হয় তার।

সুরকার আলাউদ্দিন আলীর সুরে অনেক গান গেয়েছেন তিনি। তার গাওয়া শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে আছে- 'সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী, 'তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন', 'হয় যদি বদনাম হোক আরও'। ৮০ দশকে 'কেন তুমি কাঁদালে' শিরোনামে একটি অডিও অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছিল তার।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে 'এক হৃদয়হীনার কাছে হৃদয়ের দাম কি আছে' গানটি গেয়েছিলেন জাফর ইকবাল। পরে রফিকুল আলমও এই গানটি গেয়েছিলেন। নায়ক জাফর ইকবাল ১৯৫০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Dhanmondi 32 demolition still ongoing

As of 10:00pm, protesters were seen taking apart bricks and rods of the the house using sledgehammers

2h ago