নিপুণকে ফিল্মে এনেছেন ডিপজল: মিশা সওদাগর
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন হয়েছে কিছুদিন আগে। নতুন কমিটি শপথও নিয়েছে। নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে হেরে গেছেন চিত্রনায়িকা নাসরিন আক্তার নিপুণ। মিশা-ডিপজল প্যানেল জয়ী হওয়ার পর তাদের ফুলের মালা পরিয়ে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু দুদিন আগে সেই নির্বাচন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ। তারপর থেকেই চলচ্চিত্রপাড়ায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। চলছে পাল্টা-পাল্টি নেতিবাচক মন্তব্য।
এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান সভাপতি মিশা সওদাগর কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
মিশা সওদাগর বলেন, 'প্রত্যেক শিল্পীর সহনশীল হওয়া দরকার। সহনশীল হতেই হবে। আমরা সবাই চলচ্চিত্র শিল্পী। একই পরিবার আমরা। নিপুণ আমার কলিগ। তার সংযত হওয়া দরকার।'
নিপুণ নানারকম মন্তব্য করেছেন, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, 'কেউ কাউকে ছোট করে বড় হতে পারে না। সম্মান দিতে হয়। সম্মান দিলে ক্ষতি নেই। হৃদয়ে সম্মান, ভালোবাসা, বিনয় ধারণ করতে হয়। কাউকে অপমান করে সম্মানিত হওয়া যায় না।'
গত নির্বাচনে মিশা সওদাগর হেরে গিয়েছিলেন নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে। সেটা উল্লেখ করে মিশা সওদাগর বলেন, 'দেখুন, আমিও আগের নির্বাচনে কাঞ্চন ভাইয়ের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। তারপরও মেনে নিয়েছিলাম। কাঞ্চন ভাইকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছিলাম।'
নিপুণের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন? জানতে চাইলে মিশা বলেন, 'ব্যক্তিগত জীবনে আমি নিপুণের সঙ্গে এক কাপ চা-ও খাইনি। যতটুকু সম্পর্ক শিল্পী হিসেবে।'
এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকাই সিনেমার এই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় খলনায়ক বলেন, 'আমরা জয়ী হওয়ার পর নিপুণ ফুলের মালা পরিয়ে দিয়েছেন। সব গণমাধ্যম তা প্রচার করেছে। মৌখিকভাবেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারপর এখন কেন এসব করছেন জানি না।'
'একটা সত্যি কথা বলি। ছটকু আহমেদকে আমি ফিল্মের ফাদার বলি। তিনি আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন। নিপুণকে ফিল্মে এনেছেন ডিপজল। গণ্যমাধ্যমের সামনে কিন্তু ডিপজল বলেছেন, "নিপুণ আমার মেয়ের মতো"। অথচ তার সম্পর্কে কীরকম মন্তব্য করছেন', যোগ করেন তিনি।
অভিমানের সুরে সময়ের তুমুল জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা আরও বলেন, 'অশিক্ষিত, সন্ত্রাসী এসবও বলেছেন। শিল্পী হয়ে এসব বলা মানায়?'
শিল্পী সমিতির নির্বাচনকালীন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে মিশা সওদাগর বলেন, 'নিপুণ এখন বলছেন, সেই নির্বাচন কমিশনও ঠিকমতো কাজ করেনি। আপিল বোর্ড নিয়েও তিনি কথা বলছেন। তাহলে বিষয়টি সাংঘর্ষিক হয়ে গেল না?'
'আমরা জয়ী হওয়ার পর নিপুণ বলেছিলেন, মিলেমিশে আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন। এখন এসব কী করছেন? কী বলছেন?'
মিশা আরও বলেন, 'আপিল বোর্ডও নিপুণ গঠন করেছেন। আমাদের শিল্পী সমিতির কিন্তু কিছু বিধান আছে, সংবিধানও আছে। সেই সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করেছেন তিনি।'
'ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মামলা-হামলা নিপুণ শিখিয়েছেন। এটা দুঃখজনক', বলেন তিনি।
মিশা আরও বলেন, 'নিপুণের ভেতরে শিক্ষা থাকলে একজন শিল্পীকে অশিক্ষিত বলতে পারতেন না। নিপুণের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। ভুল বুঝতে পারুক। তিনি একজন শিল্পী। আমরাও শিল্পী। এখানে কেউ বাবা-মার পরিচয়ে পরিচিত নই, সবাই যার যার কর্ম দিয়ে পরিচিত।'
Comments