৫-১০ বছরে ‘পরাণ’ আর হবে না: মিশা সওদাগর

মিশা সওদাগর। ছবি: স্টার

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের অন্যতম খল অভিনয়শিল্পী মিশা সওদাগর। ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে রেকর্ড সংখ্যক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বর্তমানে তার হাতে রয়েছে ৪টি নতুন সিনেমা 'লোকাল', 'পর্দার আড়ালে', 'বিট্রে' ও 'জিম্মি-টু'।

সম্প্রতি আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই অভিনেতা। সিনেমার বর্তমান অবস্থাসহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

কেউ কেউ বলছেন বাংলাদেশের সিনেমার সুবাতাস বইছে, আপনার মন্তব্য কী? দেশের সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রি নিয়ে আপনার মতামত কী?

মিশা সওদাগর: আমি মনে করি ১০টি ভালো সিনেমা পুরো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি বদলে দিতে পারে। একটি বা দুটি সিনেমা আশার আলো দেখাচ্ছে। একজন শিল্পী হিসেবে আমি খুশি। কিন্ত আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বলছে, পর পর কয়েকটি ভালো সিনেমা দরকার। সেজন্য আমি ১০টি ভালো সিনেমার কথা বলছি। তাহলে ঘুরে দাঁড়াবে আমাদের সিনেমা।

সুবাতাস কথাটি শুনতে দারুণ লাগে। অনেকেই আমাকে কথাটি বলেছেন বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। ঢাকাই সিনেমাকে ঘিরে এই সুবাতাস অব্যাহত থাকুক।

ছবি: স্টার

সিনেমার খরা কাটিয়ে ওঠা কি সম্ভব?

মিশা সওদাগর: হুট করে নয়, একটু সময় লাগবে খরা কাটিয়ে উঠতে। আমি যতটুকু জানি তা হচ্ছে, দেবাশীষ বিশ্বাসের শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-টু দিয়ে একটু একটু করে দর্শক আসা শুরু করেন। এরপর ঈদুল আজহার সময় 'শান' ও 'গলুই' ভালো দর্শক টানতে সক্ষম হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এখনকার দুটি সিনেমা 'পরাণ' ও 'দিন: দ্য ডে' দর্শক ধরে রেখেছে। 'সাইকো' কোনো কোনো জায়গায় ভালো চলছে। কিন্তু 'পরাণ' ও 'দিন: দ্য ডে' খুবই ভালো চলছে। শুনেছি, কোনো কোনো দিন টিকিটও পাওয়া যায়নি। এভাবে যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সম্ভব হয়, তাহলে ঢাকার সিনেমার খরা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।

'পরাণ' সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখেছেন, কেমন লেগেছে?

মিশা সওদাগর: ভীষণ ভালো লেগেছে। ৫-১০ বছরে 'পরাণ' আর হবে না। 'পরাণ' একটাই। 'পরাণের' মতো সিনেমা একবারই হয়। 'পরাণ' আমাদের সিনেমা। 'পরাণ' এখানকার মাটি ও মানুষের গল্পের সিনেমা। 'পরাণ' সিনেমার শিল্পীরা প্রাণ দিয়ে অভিনয় করেছেন। এই সিনেমা পরিবার নিয়ে দেখা সম্ভব। এই সিনেমায় পরিপূর্ণ গল্প আছে।

'হাওয়া' সিনেমার একটি গানে দেশের সর্বত্র শোনা যাচ্ছে। এই সিনেমা কতটা হিট বলে মনে করছেন?

মিশা সওদাগর: 'হাওয়া' সিনেমায় চঞ্চল চৌধুরীর মতো অসম্ভব মেধাবী ও পরিশ্রমী শিল্পী আছেন। আরও অনেকে আছেন। হাওয়া সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন একজন সুনির্মাতা। ইতোমধ্যে একটি গান সুপারডুপার হিট হয়েছে। আমি খোঁজ নিয়েছি। সবাই এই সিনেমা নিয়ে বিশাল স্বপ্ন দেখছেন। অমিও দেখছি। 'হাওয়া' সিনেমার জন্য আমার ভালোবাসা। 'হাওয়া' দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হোক।

দর্শকরা মূলত কী ধরনের সিনেমা দেখতে চায়?

মিশা সওদাগর: যে সিনেমায় মাটির গন্ধ থাকে। যে সিনেমায় দেশের মানুষের কথা থাকে। যে সিনেমায় নিজেদের জীবনের কথা উঠে আসে। যে সিনেমাটি দেখার পর মনে হয় এটা তো আমাদের জীবনের গল্প। দর্শকরা তেমন সিনেমা দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

একটি সিনেমায় পরিচালকের ওপর কতটা নির্ভর করে অভিনয়শিল্পীরা?

মিশা সওদাগর: সিনেমা পুরোটাই পরিচালকনির্ভর। পরিচালক যা বলেন বা যেভাবে চান, আমি সেভাবেই অভিনয় করি। আমার কাছে এই মাধ্যমটি পরিচালকনির্ভর। পরিচালকই পারেন সব শিল্পীর কাছ থেকে সুন্দর অভিনয় বের করে নিতে। যদি কোনো পরিচালক হৃদয় দিয়ে কোনো সিনেমা নির্মাণ করেন তাহলে  সফলতা আসবেই।

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

7h ago