ভৌগলিক সীমারেখা ভাঙা নির্মাতা রাজামৌলি

এস এস রাজামৌলি। ছবি: সংগৃহীত

আরআরআর চলচ্চিত্র নির্মাতা এস এস রাজামৌলি আজ ৪৯ বছরে পা দিয়েছেন। কিন্তু কে এই এস এস রাজামৌলি, যিনি ভৌগলিক সীমারেখা ভেঙে চলচ্চিত্রে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছেন।

তৎকালীন সংযুক্ত অন্ধ্র প্রদেশের বাইরে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলো তাকে সিমহাদ্রির মাধ্যমে আবিষ্কার করেছিল। তবে, পুরো ভারত তাকে খুঁজে পেয়েছিল বাহুবলীর মাধ্যমে। আর বাকি বিশ্বে তার নাম উচ্চারিত হয়েছে আরআরআরের মাধ্যমে। রাজামৌলির বিকাশের গতিপথ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গল্প বলা। আর এটিই তার সিনেমার বিশ্বব্যাপী সফল হয়ে ওঠার মূল কারণ, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। হলিউডেও রাজামৌলির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তিনি আমেরিকান ট্যালেন্ট এজেন্সি ক্রিয়েটিভ আর্টিস্টস এজেন্সির (সিএএ) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। যেটি টম হ্যাঙ্কস, স্টিভেন স্পিলবার্গ, জেন্ডায়া, আভা ডুভারনে এবং রায়ান মারফির মতো কয়েকজনের নাম পরিচালনা করে।

রাজামৌলি ইতোমধ্যে জাপানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, এজন্য তিনি বাহুবলী: দ্য কনক্লুশনকে ধন্যবাদ দিতে পারেন। ২০১৮ সালের ফ্যান্টাসি ড্রামাটি শুধু ভারতেই নয়, জাপানেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সিনেমাটি ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে প্রেক্ষাগৃহে চলেছিল। ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে রাজামৌলি এখন বড় আকারে জাপানে আরআরআর মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আরআরআর আগামী ২১ অক্টোবর জাপানি বক্স অফিসে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে জাপানে মুক্তি সিনেমাটির  চলমান অস্কার প্রচারাভিযানকে আরও বাড়াবে।

আরআরআরের প্রতিটি স্ক্রিনিং বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। লস এঞ্জেলেসের চীনা থিয়েটারে বিয়ন্ড ফেস্টের অংশ হিসাবে ছবিটির সাম্প্রতিক স্ক্রিনিংটি বেশ আলোড়ন ফেলে। রাজামৌলির উপস্থিতিতে আইম্যাক্সের পর্দায় ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ সিনেমাটি দেখেছিলেন। ভারতীয়রা ছাড়া অন্যরা যেভাবে সিনেমাটিতে সাড়া দিয়েছেন তা দেখে চলচ্চিত্র নির্মাতা নিজেই অবাক হন। স্ক্রিনিংয়ের ভিজ্যুয়ালে দেখা যায়, চলচ্চিত্রটির অতিউৎসাহী ভক্তদের একটি দল 'নাটু নাটু' গানটির হুক স্টেপ করছে। ফলে রাজামৌলি এভাবে বলতে শুরু করেন, 'ভেবেছিলাম আমি আমেরিকায় এসেছি, কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে এটি হায়দ্রাবাদের আমিরপেট নামক একটি জায়গা, আমার নিজের শহর।'

এসএস রাজামৌলি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পাওয়া ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা হয়ে উঠছেন। ভারতীয় সিনেমায় তার বৈশ্বিক সাফল্যের প্রভাব অনস্বীকার্য। মণি রত্নমের নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, রাজামৌলিই তাকে তার স্বপ্নের সিনেমা পনিয়িন সেলভানকে দু'ভাগে ভাগ করার সাহস জুগিয়েছেন। কয়েক দশক ধরে রত্নমকে পনিয়িন সেলভান নির্মাণে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো- একটি চলচ্চিত্রকে একাধিক অংশে বিভক্ত করা। যা অতীতে একটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হত। কিন্তু, বাহুবলির পর থেকে ভারতে বিশাল বক্স অফিস সাফল্যের জন্য এটি যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।

এস এস রাজামৌলির গল্প বলার বিষয়ে এমন কী আছে যা ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে? রাজামৌলির আগের চলচ্চিত্রগুলো পুনরায় না দেখে এবং তাদের মধ্যে থাকা সূত্রগুলো না খুঁজে এর উত্তর দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু এটা তো সত্য তার নির্মাণে আলাদা কিছু আছে। এজন্যই দর্শক তার সিনেমাগুলো দেখছেন, বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Interim govt not taking action following white paper: Economists

The makers of the white paper criticised the government for increasing value-added tax

39m ago