চিরসবুজ নায়ক জাফর ইকবালের গানের জগত

জাফর ইকবাল। ছবি: সংগৃহীত

চোখে সানগ্লাস, স্টাইল করা চুল, হাফ হাতা গেঞ্জি গায়ে ব্যক্তিত্ব, ফ্যাশন, রুচিবোধ আর আধুনিকতায় তিনি ছিলেন ক্রেজ। স্টাইলিশ আর অনবদ্য অভিনয়ের পাশাপাশি নিজেই গান গাইতেন, বাজাতেন গিটার-হারমোনিয়াম, বন্ধুদের নিয়ে ব্যান্ডও গড়েছিলেন।

৭০-৮০'র দশকের কিংবদন্তী চিত্রনায়ক জাফর ইকবালের পরিচয় এমনই। যেমন দর্শকদের মনে আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি, তেমনি ছিল তার এক গানের জগত।

তার গানের প্রশংসা করে আরেক কিংবদন্তী চিত্রনায়িকা ববিতা বলেছিলেন, 'জাফর ইকবাল খুব ভালো ইংরেজি গান গাইতে পারতেন। গিটার বাজিয়ে তার কণ্ঠে ইংলিশ গান শোনাটা আমাদের সময়কার যেকোনো মেয়ের জন্য স্বপ্নের একটি মুহূর্ত।'

গায়ক হিসেবে অনন্য জাফর ইকবাল ছোটবেলা থেকেই ভক্ত ছিলেন এলভিস প্রিসলির। ১৯৬৬ সালে বন্ধুদের নিয়ে 'রোলিং স্টোন' ব্যান্ড গড়েছিলেন। 

সংগীত পরিচালক ও ভাই আনোয়ার পারভেজের সুরে 'বদনাম' সিনেমার 'হয় যদি বদনাম হোক আরও' গানটি দিয়ে প্লে-ব্যাকে তার অভিষেক।

আলাউদ্দিন আলীর সুরে মনিরুজ্জামান মনিরের কথায় 'সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী' জাফর ইকবালের গাওয়া একটি চিরসবুজ গান।

৮০'র দশকে 'কেন তুমি কাঁদালে' শিরোনামে তার একটি অডিও অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে 'এক হৃদয়হীনার কাছে হৃদয়ের দাম কি আছে' গানটি গেয়েছিলেন জাফর ইকবাল। পরে রফিকুল আলমও একই গান গেয়েছিলেন।

এছাড়াও 'তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন' জাফর ইকবালের গাওয়া শ্রোতাপ্রিয় একটি গান।

আজ ২৫ সেপ্টেম্বর এই নায়কের জন্মদিন। ১৯৫০ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বোন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী শাহানাজ রহমতুল্লাহ এবং বড়ভাই সংগীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজ।

জাফর ইকবালের প্রথম সিনেমা ছিল 'আপন পর'। খান আতাউর রহমান পরিচালিত ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৯ সালে। এতে জাফর ইকবালের নায়িকা ছিলেন কবরী।

১৯৭০ দশকের মাঝামাঝি 'সূর্য সংগ্রাম' ছবিতে ববিতার বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া 'মাস্তান' ছবির বদৌলতে 'ড্যাশিং' নায়কের পরিচিতি পান জাফর ইকবাল। তিনি রোমান্টিক নায়ক হিসেবে পরিচিতি পান 'নয়নের আলো' সিনেমার মাধ্যমে।

প্রায় ১৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জাফর ইকবাল। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো: 'অবুঝ হৃদয়', 'ভাই বন্ধু', 'অবদান', 'প্রেমিক', 'সাধারণ মেয়ে', 'ফকির মজনু শাহ', 'দিনের পর দিন', 'বেদ্বীন', 'অংশীদার', 'মেঘ বিজলী বাদল', 'নয়নের আলো', 'সাত রাজার ধন', 'আশীর্বাদ', 'অপমান', 'এক মুঠো ভাত', 'গৃহলক্ষ্মী', 'ওগো বিদেশিনী', 'প্রেমিক', 'নবাব', 'প্রতিরোধ', 'ফুলের মালা', 'সিআইডি', 'মর্যাদা', 'সন্ধি', 'বন্ধু আমার', 'উসিলা' ইত্যাদি।

১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি জীবনের ওপারে চলে যান প্রিয় জাফর ইকবাল। 


 

Comments

The Daily Star  | English

Yunus inaugurates month-long programme on July uprising

The chief adviser said the annual observance aimed to prevent the reemergence of authoritarian rule in the country

48m ago