সত্য কথা বলতে ভয় পাই না: সাদিয়া আয়মান

সাদিয়া আয়মান। ছবি: শেখ মেহেদী মোরশেদ/স্টার

টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে দর্শক পরিচিতি পেয়েছেন নতুন প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী সাদিয়া আয়মান। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের 'কাজল রেখা' সিনেমায় অভিনয় করে ইতোমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে সরব ছিলেন এই অভিনেত্রী।

দ্য ডেইলি স্টারকে সাদিয়া আয়মান বলেন, আবু সাঈদ যেদিন মারা গেলেন, সেদিন একটি লেখা পোস্ট করেছিলাম। কাছের মানুষদের অনেকেই বলেছিলেন, 'এসব পোস্ট করো না, পরে সমস্যা হতে পারে'। কিন্তু সত্যি কথা বলতে তো ভয়ের কিছু নেই। সেজন্য সাহস নিয়ে পোস্ট করি। নিজের মনোভাব প্রকাশ করি।

'আমি আমার জায়গা থেকে সত্য কথা বলেছি। এখন যেরকম মনের কথা সবাই বলতে পরছেন, এটাই হওয়া উচিত', বলেন তিনি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কাছে প্রত্যাশা কী, জানতে চাইলে সাদিয়া আয়মান বলেন, অনেক প্রত্যাশা। দুর্নীতিমুক্ত দেশ হোক। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ হোক। মিথ্যা মামলায় অনেকে শাস্তি পেয়েছেন, অনেকে গুম হয়েছেন। এসবের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার হোক।

ছবি: শেখ মেহেদী মোরশেদ/স্টার

কেউ কেউ বলছেন নতুন প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে আপনি অনেক বেশি সাহসী... তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি অন্যায় দেখতে পারি না। ছোটবেলা থেকে আমি স্ট্রেট ফরোয়ার্ড। কাছের মানুষদের সবাই এটা জানেন। সত্য কথা বলতে ভয় পাই না।

এক প্রশ্নের জবাবে সাদিয়া আয়মান বলেন, খুব করে চাইছিলাম কিছু কথা লেখার জন্য, যদি ছাত্ররা মোটিভেটেড হয়, তাদের যদি উপকারে আসে। কেন লিখব না? ছাত্ররা যা করেছে, যেভাবে আন্দোলন করেছে, তা তো সঠিক ছিল।

তিনি বলেন, এত ছাত্র মারা গেল, সাধারণ মানুষ মারা গেল, তা সত্যিই দুঃখজনক। বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো না। ১৮ জুলাই থেকে ফেসবুকে আরও বেশি সরব হয়েছি।

'যেদিন আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়, সেদিন কষ্ট পেয়েছিলাম। সেদিন মন থেকে চেয়েছিলাম এই আন্দোলন যেন বন্ধ না হয়, শিক্ষার্থীরা যেন অধিকার ফিরে পায়', বলেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে ধরে নেওয়ার বিষয়ে সাদিয়া বলেন, তাদের বিবৃতি দেওয়ার সময়ই বুঝেছিলাম জোর করে এটা করা হয়েছে। পরে তো সমন্বয়কারীরাই তা বলেছেন।

আন্দোলনের সময় এত সরব ছিলেন, ভয় পাননি, জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, মা-বাবা ভয় পাচ্ছিলেন। আমাকে বলেছিলেন, 'যেসব স্ট্যাটাস দিয়েছ, মুছে ফেল'। আমি মা-বাবাকে বুঝিয়েছি, ভুল কিছু তো লিখিনি। সত্যি কথা লিখেছি।

ছবি: শেখ মেহেদী মোরশেদ/স্টার

বিটিভিতে ধ্বংসযজ্ঞ হওয়ার পর কয়েকজন শিল্পী সেখানে গিয়ে কান্নাকাটি করেছিলেন এবং তখনও সাদিয়া আয়মান ফেসবুকে তা নিয়ে লিখেছিলেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সব নিউজ দেখে শিওর হয়েছিলাম উনারা বিটিভিতে গিয়ে কথা বলেছেন, কেউ কেউ কান্নাকাটিও করেছেন। তারপরই আমি স্ট্যাটাস দিই। তখনো কেউ কেউ স্ট্যাটাস মুছে ফেলতে বলেছিলেন। আমি বলেছিলাম, যদি কান্নাকাটি সত্যি না হয়, তাহলে সরি বলে ডিলিট করে দেবো। কিন্তু পরে তো সবাই জানতে পারে কান্নাকাটি করাটা সত্যি ছিল।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিনিয়র হিসেবে তাদের সবসময় শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাদের কান্নাকাটির বিষয়টি ভালো লাগেনি।

সবশেষ ১৮ জুলাই একটি এক ঘণ্টার নাটকের শুটিং করেছেন সাদিয়া আয়মান। তিনি বলেন, শুটিং ডেট আগে থেকে দেওয়া ছিল। সেজন্য করেছি। তবে, শুটিং ইউনিটে সারাদিন সবাই ভয়ে ছিলাম, আতঙ্কে ছিলাম। অনেক রাতে বাসায় ফেরার সময় আমার গাড়ির সামনে লোকজন এসেছে, চেক করেছে। তবে, তারা শিক্ষার্থী ছিল না।

Comments

The Daily Star  | English

Have patience for election

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday said the government would issue a roadmap to the election as soon decisions on electoral reforms are made.

5h ago