নিরাপত্তার অভাবে পুরোদমে চালু হয়নি কারখানা
গণঅন্দোলনের মুখে তিন দিন আগে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার পর নিরাপত্তার অভাবে কলকারখানাগুলো এখনো পুরোদমে চালু হতে পারেনি।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে একের পর এক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা আতঙ্কিত।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত সহিংসতায় ৫৩৫ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন।
এক ব্যবসায়ী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'এখন আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। এটিই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।'
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে উৎপাদন ও সেবা খাতের ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।'
তিনি আরও বলেন, 'বিদেশে আমাদের বাণিজ্য অংশীদারদের অবশ্যই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, বেসরকারি খাত আবার ব্যবসায় ফিরেছে। তাদের দেওয়া আমাদের সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।'
এক শীর্ষ ইস্পাত প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সীমিত আকারে কারখানা চালালেও নিরাপত্তার কারণে পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না।'
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ইস্পাত পরিবহন শুরু করব বলেও জানান তিনি।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার অভাবে পণ্য উৎপাদন ও বিতরণ দুটোই মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শ্রমিকরা আতঙ্কিত। অনেকে কাজে না আসায় কারখানা পুরোপুরি চালাতে পারছি না।'
তিনি আরও বলেন, 'একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতির কারণে সার্বিক নিরাপত্তা না থাকায় আমাদের পণ্য পরিবহন আটকে আছে। নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা জানালে সেনাবাহিনী এগিয়ে আসছে।'
'কিন্তু তা যথেষ্ট নয়,' বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে আমাদের ডিস্ট্রিবিউটর ও ভাড়া করা আউটলেটের মালিকদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।'
এছাড়াও বন্দরে পণ্য সরবরাহ ও জাহাজীকরণে বাধা পাওয়ায় দুই সপ্তাহের বেশি রপ্তানি বন্ধ আছে।
এসিআই হেলথকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মহিবুজ জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানার কাছাকাছি থাকা অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে আংশিকভাবে কারখানা চালু করা হয়েছে।'
'চলমান অস্থিরতার কারণে বেশিরভাগ শ্রমিক কাজে আসেননি' উল্লেখ করে তিনি জানান, তবে ফার্মেসিগুলোয় ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।
Comments