বিদেশি ঋণ প্রথমবার ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

বিদেশি ঋণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, ডলার,

বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। দেশে বিদেশি মুদ্রার ঘাটতির মধ্যে বিদেশি ঋণের এই বৃদ্ধি চ্যালেঞ্জিং ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল শেষে সামগ্রিক বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, যা এক বছর আগে ছিল ৯৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

এই ঋণের মধ্যে ৭৯ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার নিয়েছে সরকারি খাত এবং বাকি অংশ নিয়েছে বেসরকারি খাত। এর মধ্যে আবার ৮৫ শতাংশ ঋণ দীর্ঘমেয়াদী এবং বাকিগুলো স্বল্পমেয়াদী।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'বিদেশি ঋণ বাড়ছে, এটা দেশের জন্য উদ্বেগজনক।'

'পরিস্থিতি সামাল দিতে চীন ও রাশিয়া থেকে যে সাপ্লাইয়ার ক্রেডিট নেওয়া হচ্ছে, তা এখনই বন্ধ করতে হবে,' বলেন তিনি।

সাপ্লাইয়ার ক্রেডিট হলো একটি বাণিজ্যিক চুক্তি, যার অধীনে একজন রপ্তানিকারক ঋণের শর্তে বিদেশি ক্রেতাকে পণ্য বা পরিষেবা দেবে।

আইএমএফের সাবেক এই অর্থনীতিবিদ বলেন, যদি বিদেশি ঋণ এভাবে ক্রমাগত বাড়তে থাকে, তাহলে এর সঙ্গে ঋণ পরিশোধের চ্যালেঞ্জ বাড়বে। কারণ দেশের রাজস্ব ও বিদেশি মুদ্রা উভয় ক্ষেত্রেই আয় কমে যাচ্ছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশিষ্ট ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশি ঋণ ও ঋণের ব্যয় দুটোই বাড়ছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৫৬২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'সর্বশেষ নেওয়া বিদেশি ঋণ ব্যয়বহুল, তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন ঋণ পরিশোধে কোনো সমস্যা না হয়।'

তিনি আরও বলেন, এছাড়া বিদেশি ঋণের বিপরীতে রিটার্ন আসছে স্থানীয় মুদ্রায় বা টাকায়, তাই ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বিদেশি ঋণের ব্যয় বাড়বে।

'প্রকল্পগুলোর জন্য পাইপলাইনে যে বিদেশি ঋণ জমা আছে, তা দ্রুত ব্যবহার করতে হবে, যেন সুদের ব্যয় না বাড়ে,' যোগ করেন তিনি।

এদিকে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ প্রায় ১৪ শতাংশ কমে ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, আগে বিদেশি ঋণের সুদহার ১ থেকে ২ শতাংশ থাকলেও এখন তা বেড়ে ৮ থেকে ৯ শতাংশ হয়েছে।

তিনি বলেন, 'এটিই বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ কমার প্রবণতার মূল কারণ।'

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

8h ago