চাহিদার শীর্ষে থাকা দেশের জনপ্রিয় বিমা পরিকল্পনা
'এনডাওমেন্ট' বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় জীবন বিমা পরিকল্পনা কারণ এটি সারাজীবনের জন্য করা হয়। এটি থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে বিমাগ্রহীতা তাদের প্রিয়জনকে আর্থিকভাবে সুরক্ষিত করতে পারেন এবং আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা পান।
এর পাশাপাশি, শিক্ষা ও সঞ্চয় প্রকল্পগুলোও গ্রাহকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।
মেটলাইফ বাংলাদেশ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির মতো শীর্ষ বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যান্য পরিকল্পনার সঙ্গে এগুলোও বিক্রি করে।
মেটলাইফের জনপ্রিয় পলিসির মধ্যে আছে—মেটলাইফ থ্রি পেমেন্ট প্ল্যান (এম৩পিপি), মেটলাইফ ডিপোজিটরস প্রোটেকশন স্কিম (এমডিপিএস), মাই চাইল্ডস এডুকেশন প্রোটেকশন প্ল্যান (এমসিইপিপি) ও এনডাওমেন্ট।
এমথ্রিপিপি তিনটি পর্যায়ে আর্থিক সুবিধা দেয় এবং এমডিপিএস গ্রাহকদের জীবন বিমা সুবিধা ছাড়াও সঞ্চয়ের সুযোগ দেয়।
'এন্ডোমেন্ট' নীতি গ্রাহকদের ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বিস্তৃত সুরক্ষা দেয়। এমসিইপিপি দেয় শিশুদের উচ্চশিক্ষার জন্য সঞ্চয়ের সুযোগ।
'এন্ডোমেন্ট' পরিকল্পনা ভবিষ্যতের আর্থিক অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্য করা হয়। এটি বিমাগ্রহীতার মৃত্যু, অক্ষমতা বা দুর্ঘটনায় পরিবারকে সুরক্ষা দেয়।
মেটলাইফ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী আলা আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রাহকদের বর্তমান আর্থিক সক্ষমতা এবং ভবিষ্যৎ চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিকল্পনা করায় এগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'পরিকল্পনাগুলোয় কোনো ব্যক্তির নির্দিষ্ট রোগ ও হাসপাতালে থাকার কারণে অতিরিক্ত সুবিধা ও ঝামেলা ছাড়াই টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।'
'এই পরিকল্পনাগুলো গ্রাহকদের প্রাধান্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে সাজানো হয়েছে। মৃত্যু, পঙ্গুত্ব ও দুর্ঘটনার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বিমার পরিধি বাড়ানো হয়েছে।'
প্রগতি লাইফ দিচ্ছে ২৯ বিমা পরিকল্পনা।
প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জালালুল আজিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের এনডাওমেন্ট পলিসিতে সঞ্চয়ের ব্যবস্থা থাকায় এটি সবচেয়ে জনপ্রিয়। আমাদের শিক্ষা ও পেনশন পরিকল্পনাও বেশ জনপ্রিয়।'
'এই বিমা পরিকল্পনাগুলো আকর্ষণীয় হওয়ায় জনপ্রিয়তা বেশি।'
তিনি জানান, কেউ ১২ বছর মেয়াদি পলিসি কিনলে প্রতি দুই বছর পর পর একটি নির্দিষ্ট শতাংশ টাকা ফেরত পাবেন। মেয়াদ শেষে বোনাসসহ পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
মৃত্যুর ক্ষেত্রে মনোনয়ন করা ব্যক্তি বিমার পুরো টাকা পাবেন।
প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্সের ডিপোজিট পেনশন স্কিম পলিসিহোল্ডারদের মেয়াদ শেষে এককালীন টাকা দেওয়া হয়।
মো. জালালুল আজিম আরও বলেন, 'দেশে স্বাস্থ্য বিমার মতো পরিকল্পনার অনেক সম্ভাবনা আছে। অথচ এটি এমন দেশ যেখানে বিমা করা মানুষের সংখ্যা বিশ্বে সর্বনিম্নের তালিকায়।'
তিনি আরও বলেন, 'মেয়াদি বিমার টাকা ব্যক্তির মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার নমিনিকে দেওয়া হয়। এর প্রিমিয়াম কম হলেও রিটার্নের হার বেশি।'
'সুতরাং, এটি জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে।'
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজিম উদ্দিন ডেইলি স্টারকে জানান, তাদের পরিকল্পনার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে এনডাওমেন্ট বিমা।
পুরো মেয়াদে তিন কিস্তিতে বিমার টাকা আংশিক পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।
লাভজনক বিনিয়োগ, নতুন ব্যবসা, বাড়ি কেনা বা সন্তানদের শিক্ষা ও বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা পেতে এই পরিকল্পনা করা যেতে পারে।
কাজিম উদ্দিনের ভাষ্য, মাসিক সঞ্চয় স্কিমও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মেয়াদ শেষে পাওয়া বোনাসের সঙ্গে পুরো টাকা এক সঙ্গে দেওয়া হয়। বিমাকারী ব্যক্তি মারা গেলে নমিনির হাতে টাকা তুলে দেওয়া হয়।
বর্তমানে দেশে ৩৫ জীবন বিমা ও ৪৬ নন-লাইফ বিমা প্রতিষ্ঠান আছে। বিমা নেওয়া মানুষের সংখ্যা বাংলাদেশে শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ, ভারতে চার দশমিক দুই শতাংশ ও পাকিস্তানে শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ।
Comments