বিদ্যুৎ, সারের বকেয়া পরিশোধ: ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ছাড়বে সরকার

বাজেট ঘাটতি আইএমএফের শর্তের সীমার মধ্যে রাখতে এই ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা

বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও সার সরবরাহকারীদের বিপুল পরিমান বকেয়া পরিশোধে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ইস্যু করতে যাচ্ছে অর্থবিভাগ।

গত দেড় বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সার ও জ্বালানির দাম বেশি থাকায় বকেয়া বেড়েছে। এতে করে বিদ্যুৎ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভর্তুকির প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও সার সরবরাহকারীদের পক্ষ থেকে ৪০টি ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য এই বন্ড ব্যবহার করা হবে।

কয়েকদিনের মধ্যে বন্ডগুলো ইস্যু শুরু হবে বলে অর্থবিভাগের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে দ্য ডেইলি স্টার জানতে পেরেছে।

প্রথমে নিষ্পত্তি করা হবে সারের ভর্তুকি বাবদ বকেয়ার অর্থ।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এবং বেসরকারি সার আমদানিকারকদের কাছে সরকারের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বকেয়া বিল রয়েছে। যাদের ১০টি ব্যাংকের কাছে ঋণ রয়েছে এবং যার অধিকাংশই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন।

বিদ্যুৎ উৎপাদক ও সার আমদানিকারক উভয়ের ব্যাংক দায় নিষ্পত্তির জন্য বন্ড ইস্যুর প্রক্রিয়া দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

প্রায় ১০০টি বেসরকারী বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর কাছে সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বকেয়া ভর্তুকি বিল রয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিশেষ বন্ডের মাধ্যমে অর্থ বিভাগ আইপিপিদের প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে।

বিশেষ বন্ডের সুদ হার ও মেয়াদপূর্তির সময়সীমা নির্ধারণে গতকাল অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বন্ডের সুদ বিদ্যমান ট্রেজারি বিল ও বন্ডের চেয়ে কিছুটা কম হবে বলে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলো বন্ডের ওপর একটি নির্দিষ্ট সুদের হার পাবে এবং ব্যাংকের তারল্য বাড়াতে এটি ব্যবহার করতে পারবে।

সর্বশেষ ২০১২-১৩ অর্থবছরে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছিল; এটি ছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৯৮৭ মিলিয়ন ডলার ঋণের শর্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বকেয়া ভর্তুকি নিষ্পত্তি করা।

যদিও আইএমএফ ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য এই ধরনের শর্ত দিয়ে দেয়নি, তবে এটি বাজেট ঘাটতির একটি সর্বোচ্চ সীমা দিয়েছে।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, সরকারের নিজস্ব কোষাগার থেকে যদি বকেয়া অর্থ নিষ্পত্তি করা হয়, তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুপাক্ষিক ঋণদাতার নির্ধারিত বাজেট ঘাটতির সীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Taka to trade more freely by next month

Bangladesh will introduce a crawling peg system by next month to make the exchange rate more flexible and improve the foreign currency reserves, a key prescription from the International Monetary Fund.

12h ago