উন্নয়ন বাজেট

থোক বরাদ্দ ব্যবহারে আরও কঠোর অবস্থানে সরকার

২০২৩-২৪ অর্থবছর, বাজেট, বিদেশ ভ্রমণ, অর্থ মন্ত্রণালয়,

সরকারের খরচ কমানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে উন্নয়ন বাজেটের থোক বরাদ্দ ব্যবহারের বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের নীতিমালা প্রকাশ করেছে।

থোক বরাদ্দ হলো এমন তহবিল যা জরুরি প্রয়োজন মোকাবিলার জন্য দেওয়া হয়।

গত ৩১ অক্টোবর অর্থ বিভাগের চিঠিতে নতুন প্রকল্পের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ১১ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ স্থগিত করতে পরিকল্পনা কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

গতকাল সংশোধিত বাজেট সংক্রান্ত নীতিমালায় জানানো হয়েছে, অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া শুধু নতুন নয়, চলমান প্রকল্পেও অর্থ বরাদ্দ করা যাবে না।

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দিলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকারের খরচ কমানোর উদ্যোগের কারণে সেসব প্রকল্পে অর্থের যোগান দিতে পারছে না।

চলতি অর্থবছরের এডিপি বাজেটে স্থানীয় অর্থায়নে নতুন প্রকল্পগুলোর জন্য থোক বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে উন্নয়ন সহায়তার জন্য ছিল আরও এক হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।

নির্বাচনের আগে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো প্রচুর প্রকল্প অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাঠালে বেশ কয়েকটি অনুমোদন পায়।

গত ৩১ অক্টোবর একনেক সভায় সরকার ৫০টির তালিকা থেকে ৩৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে ২৭টি নতুন ও বাকিগুলো সংশোধিত।

এরপর, গত ৯ নভেম্বর একনেক সভায় ৪৫টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনের পর আর্থিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে মন্ত্রণালয় এই ব্যবস্থা শিথিল করতে পারে।'

সংশোধিত বাজেট নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোকে সামঞ্জস্য করতে সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা সীমিত করতে হবে। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো পুরোপুরি বাদ দিতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ আগামী জানুয়ারির মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দিতে না পারলে সেগুলো সংশোধিত এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সেই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ বাড়ানোসহ দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে।'

গত ২২ নভেম্বর দেশের রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ রেকর্ড ৪০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।

নির্বাচনের পর এ কর্মপরিকল্পনা সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

'থোক বরাদ্দ থেকে নতুন ও সংশোধিত প্রকল্পগুলোর খরচ নির্ধারণে কর্মপরিকল্পনাটি গুরুত্বপূর্ণ হবে' বলে মনে করেন তিনি।

অর্থ বিভাগ চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে চলমান খরচ কমানোর উদ্যোগগুলো ধরে রাখবে। যেমন নতুন গাড়ি না কেনা, বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি না দেওয়া এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য বরাদ্দ কমানো।

একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সেই কর্মকর্তা আরও জানান, তারা দ্রুত চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন শুরু করবেন এবং আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন সরকার তা চূড়ান্ত করবে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

15h ago