পোশাকশ্রমিকদের নতুন মজুরির গেজেট প্রকাশ

পোশাকশ্রমিক
ছবি: সংগৃহীত

পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ ও গ্রেডের সংখ্যা সাত থেকে কমিয়ে পাঁচে কমিয়ে এনে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গেজেট প্রকাশের ১৪ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য আপত্তি থাকলে তা জমা দিতে বলেছে।

গত ৯ এপ্রিল গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ডে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিদের দাবি অনুযায়ী গেজেটে পোশাকশ্রমিকদের গ্রেড সংখ্যা সাত থেকে কমিয়ে পাঁচ করা হয়েছে।

আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কার্যকর হবে এবং জানুয়ারিতে নতুন কাঠামোয় পোশাকশ্রমিকরা বেতন পাবেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গ্রেড পাঁচ বা এন্ট্রি লেভেলের একজন কর্মী ন্যূনতম মাসিক বেতন হিসেবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা পাবেন। এর মধ্যে মূল বেতন ছয় হাজার ৭০০ টাকা, বাড়িভাড়া তিন হাজার ৩৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, পরিবহন ভাতা ৪৫০ টাকা ও খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গ্রেড চারের শ্রমিকরা মূল বেতন সাত হাজার ৫০ টাকা, বাড়িভাড়া তিন হাজার ৫২৫ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যানবাহন ৪৫০ টাকা ও খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকাসহ মোট ১৩ হাজার ২৫ টাকা পাবেন।

গ্রেড তিনের শ্রমিকদের মাসিক ন্যূনতম মজুরি ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে মূল বেতন সাত হাজার ৪০০ টাকা, বাড়িভাড়া তিন হাজার ৭০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, পরিবহন ভাতা ৪৫০ টাকা ও খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

গ্রেড দুইয়ের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ১৫০ টাকা। এর মধ্যে মূল বেতন সাত হাজার ৮০০ টাকা, বাড়িভাড়া তিন হাজার ৯০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, পরিবহন ভাতা ৪৫০ টাকা ও খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

গ্রেড একের শ্রমিকরা প্রতি মাসে ন্যূনতম মজুরি পাবেন ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা। এর মধ্যে মূল বেতন আট হাজার ২০০ টাকা, বাড়িভাড়া চার হাজার ১০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, পরিবহন ভাতা ৪৫০ টাকা ও খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শিক্ষানবিশ শ্রমিকের মোট বেতন নয় হাজার ৮৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল বেতন চার হাজার ৯৫০ টাকা, বাড়িভাড়া দুই হাজার ৪৭৫ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যানবাহন ভাতা ৪৫০ টাকা ও খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

শিক্ষানবিশদের মেয়াদ হবে তিন মাস। এর মধ্যে যদি শিক্ষানবিশশিপ শেষ না হয় তবে তা আরও তিন মাস বাড়ানো যেতে পারে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ওই শ্রমিককে চাকরি দেওয়া হবে।

সরকার পোশাক কারখানার কর্মীদের বেতনের পরিসীমাও প্রকাশ করেছে।

গ্রেড চারের কর্মচারীদের ন্যূনতম মাসিক বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮০০ টাকা। গ্রেড তিনের কর্মচারীদের জন্য ১৫ হাজার ২০০ টাকা, গ্রেড দুইয়ের কর্মচারীদের জন্য ১৫ হাজার ৯৫০ টাকা ও গ্রেড একের কর্মচারীদের জন্য ১৮ হাজার ৮০০ টাকা।

একজন শিক্ষানবিশ কর্মচারী ন্যূনতম মোট বেতন পাবেন নয় হাজার ৯৫০ টাকা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ মনে করেন, নতুন মজুরি কাঠামো বিশ্লেষণ করে আরও তথ্য সংগ্রহ করা দরকার।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির পর বাড়িওয়ালারা যেন অস্বাভাবিকভাবে বাড়িভাড়া না বাড়িয়ে দিতে পারেন বিষয়টি সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।'

তার মতে, মূল্যস্ফীতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ন্যূনতম মজুরি শ্রমিকদের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।

১৯৮৬ সালে প্রথমবারের মতো পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৬২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে তা ৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয় ৯৩০ টাকা ও ২০০৬ সালে ৭৮ দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়ে হয় এক হাজার ৬৬২ টাকা।

২০১০ সালে বেতন ৮০ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার টাকা করা হয়।

২০১৩ সালে মজুরি ৭৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বাড়িয়ে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা ও ২০১৮ সালে ৫০ দশমিক ৯৪ শতাংশ বাড়িয়ে আট হাজার টাকা করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

'State intelligence agency' is attempting to form political party, Rizvi alleges

Doubts are growing as to whether there are subtle efforts within the government to weaken and break the BNP, he also said

3h ago