পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি দ্রুত ঘোষণার দাবি ট্রেড ইউনিয়নগুলোর

পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি
সর্বনিম্ন মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গাজীপুর সদরের ভোগরায় পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

পোশাক কারখানার ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা শ্রমিকদের 'মর্যাদাপূর্ণ' ন্যূনতম মজুরি যত দ্রুত সম্ভব ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আশুলিয়া, গাজীপুর ও সাভারের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যত দ্রুত সম্ভব 'গ্রহণযোগ্য' বেতন ঘোষণার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন।

ট্রেড ইউনিয়ন ও ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের নেতারা জানিয়েছেন, বকেয়া বেতনের দাবিতেও এই আন্দোলন চলছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে ঢাকার শ্রমভবনে বৈঠকে শ্রমিক সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক নেতা সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মাসিক খরচ মেটাতে না পারায় শ্রমিকরা এই আন্দোলন করছেন।

চলতি মজুরি বোর্ডের ছয় মাসের মেয়াদ গত ৯ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ায় ইতোমধ্যে বেতন বাড়ানো হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

তবে এই মেয়াদ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কার্যকর হবে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নতুন মজুরি কাঠামোর আওতায় শ্রমিকরা বেতন পাবেন।

তাছাড়া মালিকপক্ষের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের প্রস্তাবিত সর্বনিম্ন বেতন আট হাজার ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ৪০০ টাকা করার প্রস্তাব যথেষ্ট নয় বলে মনে করায় শ্রমিকদের একটি অংশ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

শ্রমিক নেতারা আরও বলেন, আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় কয়েকটি কারখানা শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করেছে এবং আগাম নোটিশ ছাড়াই তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা আরও জানান, মাঝেমধ্যে পোশাক কারখানার কর্মকর্তারা শ্রমিকদের গালিগালাজ ও মারধর করেন। কাজের সময় সামান্যতম অপরাধের জন্য তাদের বেতন কেটে নেন।

এছাড়াও, কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছেন এবং শ্রমিকদের আন্দোলনে জড়াতে উস্কানি দিচ্ছেন বলে ইউনিয়ন নেতারা অভিযোগ করেছেন।

সরকার ও পোশাক মালিকদের যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলো চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিও জানান তারা।

গত ৯ এপ্রিল পোশাক শ্রমিকদের জন্য গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে মজুরি বোর্ড কাজ করায় আমরা আশা করছি সময়মতো বেতন ঘোষণা করা হবে।'

শ্রমিক নেতারা ২৩ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা দাবি করলেও শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন হিসেবে মজুরি বোর্ডে ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা প্রস্তাব করেছেন রনি।

পোশাক শ্রমিকদের সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রমিকরা হতাশ। তাদের শান্ত করতে মজুরি বোর্ড ন্যূনতম বেতন শিগগিরই ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।'

'শ্রমিকরা নিয়ম মেনে আন্দোলন করছেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আশা করা যায় তাদের সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।'

বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বহিরাগতদের প্ররোচনায় শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন।'

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য শাজাহান খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউনিয়ন নেতারা শ্রমিকদের জানিয়েছেন যে মজুরি বোর্ড এ নিয়ে কাজ করছে।'

আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় থাকায় এখনো বেতন নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী।

তার পরামর্শ, আন্দোলন বন্ধ করতে শ্রমিকদের রাজি করানোর দায়িত্ব ইউনিয়ন নেতাদের। কারণ মজুরি বোর্ড এই বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

Comments

The Daily Star  | English

Familiar Dhaka in an unfamiliar mood

The familiar city now appears in an unfamiliar form—no traffic jams, no honking, no packed footpaths

2h ago