বার্থ অপারেটর-শিপিং এজেন্ট দ্বন্দ্ব

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠা-নামায় ধীরগতি

চট্টগ্রাম বন্দর
ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার ফাইল ফটো

অনবোর্ড কনটেইনার হ্যান্ডেলিং চার্জ বাড়ানো নিয়ে শিপিং এজেন্টদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের সুরাহা হয়নি গত দুই মাসেও। এর জেরে চট্টগ্রাম বন্দরের জিসিবি টার্মিনালের ছয় জেটিতে বার্থ অপারেটররা জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ ধীরগতিতে করছেন।

এসব জেটিতে থাকা জাহাজগুলোয় কনটেইনার ওঠানো-নামানো কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। এটি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

দুই পক্ষের সঙ্গে বারবার বৈঠকের পরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) নৌ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।

গত ৬ মার্চ নৌ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে পাঠানো চিঠিতে চবক সচিব মো. ওমর ফারুক বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন করা, বাজারে পণ্যের সরবরাহ অবিঘ্নিত রাখা এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে বার্থ অপারেটরদেরকে শিপিং এজেন্টদের দেওয়া হার যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্যভাবে বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ জরুরি বলে জানিয়েছেন।

অনবোর্ড কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ বাড়ানো নিয়ে বার্থ অপারেটর ও শিপিং এজেন্টদের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব তীব্র হয় গত জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে। ওই সময় বার্থ অপারেটররা সেই চার্জ প্রতি কনটেইনারে পাঁচ ডলার করে বাড়তি দেওয়ার অনুরোধ করে শিপিং এজেন্টদের চিঠি দেন। এটি শিপিং এজেন্টরা বিরোধিতা করে আসছেন।

এ বিষয়ে বার্থ অপারেটরস, শিপ হ্যান্ডেলিং অপারেটরস অ্যান্ড টার্মিনাল অপারেটরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরীর দাবি, 'আমরা ২০০৭ সাল থেকে এই অনবোর্ড হ্যান্ডলিং চার্জ বাড়াইনি। শ্রমিক মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় পুরোনো হারে কাজ চালানো অসম্ভব।'

এই প্রস্তাবকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বার্থ অপারেটররা ২০১৬ সাল থেকে অন বোর্ড হ্যান্ডেলি়ং চার্জের ৪০ শতাংশের ওপর প্রতি বছর চার শতাংশ হারে বাড়িয়ে আসছেন।'

চার্জ বাড়ানোর দাবি মেনে না নেওয়ায় বার্থ অপারেটররা জাহাজে কনটেইনার উঠানামায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিকদের গ্যাংগ (গ্রুপ) ও ট্রেইলার কমিয়ে পরিচালন কার্যক্রম করছেন বলে অভিযোগ আছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের জিসিবি টার্মিনালের ছয় জেটিতে ক্রেইন যুক্ত (গিয়ার্ড) কনটেইনার জাহাজ ভেড়ানো হয়। বাকি ছয় জেটিতে ভেড়ানো হয় ক্রেইন ছাড়া বা গিয়ারলেস জাহাজ।

একটি গিয়ার্ড জাহাজে দুইটি ক্রেইন থাকলে দুই গ্যাংগ শ্রমিক ও কমপক্ষে বারটি ট্রেইলার সরবরাহ করে থাকে বার্থ অপারেটররা।

শিপিং এজেন্টদের অভিযোগ এ সংখ্যা সম্প্রতি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন বার্থ অপারেটররা।

এতে করে গত সপ্তাহে চারটি জাহাজে কনটেইনার ওঠা-নামার কার্যক্রমে ধীরগতি হয়েছে। ফলে এসব জাহাজ অতিরিক্ত এক থেকে দুই দিন বেশি সময় জেটিতে থাকতে হয়েছে।

গতকাল রোববার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিবদমান দুই সংগঠনের পাঁচ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Fuel to Air India jet engines cut off moments before crash: probe

The Dreamliner was headed from Ahmedabad to London when it crashed, killing all but one of the 242 people on board as well as 19 people on the ground

2h ago