কনটেইনারে মালয়েশিয়া যাওয়া কিশোর ‘ফাহিম’ বাংলাদেশি কিংবা রোহিঙ্গা
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর যাওয়া একটি জাহাজের খালি কনটেইনার থেকে উদ্ধার কিশোরের নাম 'ফাহিম' এবং সে হয় বাংলাদেশি কিংবা রোহিঙ্গা।
প্রাথমিক তদন্তের পর স্থানীয় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এমনই ধারণা করছে।
তারা বলছে, ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোর হয়ত ইচ্ছাকৃতভাবে লুকিয়ে মালয়েশিয়া নাও যেতে পারে। উদ্ধারের আগে বা পরে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি।
খেলতে খেলতে বা বিশ্রাম নিতে গিয়ে সে কনটেইনারে ঢুকে যায় এবং এক পর্যায়ে তালা দেওয়ার পর সেখানে আটকে পড়ে বলে বলে মনে করছে কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী এমভি ইন্টিগ্রা জাহাজটি গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা হয় এবং গত সোমবার সকালে মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং পৌঁছায়।
পরে মঙ্গলবার রাতে কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষ আনুমানিক ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরকে উদ্ধার করে।
তাকে উদ্ধারের একটি ভিডিও স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দ্য ডেইলি স্টারের কাছেও ভিডিওটি এসেছে।
এতে দেখা যায়, ওই বন্দরের বাংলাদেশি কর্মীরা বাংলায় নাম জিজ্ঞাসা করলে ছেলেটি নিজের নাম ফাহিম বলছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের শিপিং সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, কেলাং বন্দরে ওই জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট এবং কনটেইনারের মালিকানা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো সর্বশেষ বার্তায় কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ওই কিশোর নিজেকে ফাহিম বলে পরিচয় দিয়েছে। তবে তার কাছে কোনো পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি।
ওই বার্তায় আরও বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদের পর কেলাং বন্দরের বাংলাদেশি কর্মীরা ওই কিশোরকে রোহিঙ্গা কিংবা বাংলাদেশি বলে মনে করছে।
ওই কিশোরের দাবি, সে খালি কনটেইনারে বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল এবং কখন সেটিতে তালা দেওয়া হয় তা সে বুঝতে পারেনি।
তবে কনটিনেন্টাল ট্রেডার্স এবং ওই কনটেইনারটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশি এজেন্ট রিলায়েন্স শিপিং লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, তারা এখনো এ ধরনের কোনো বার্তা পাননি।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) কর্মকর্তারাও বলছেন, কোনো কিশোর উদ্ধারের বিষয়ে তারা মালয়েশিয়ার বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাননি।
এদিকে, সাউথ কেলাংয়ের এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার একটি নিউজপোর্টাল জানিয়েছে, এমন নয় যে ছেলেটি লুকিয়ে মালয়েশিয়া এসেছে। বরং বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে সে অনিচ্ছাকৃতভাবে কনটেইনারে আটকে পড়ে।
এ বিষয়ে সাউথ কেলাং পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট তদন্ত পরিচালনা করছে।
ওই কিশোর বর্তমানে কেলাংয়ের টিংকু আম্পুয়ান রহিমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল।
Comments