গাজীপুরে কেয়া গ্রুপের ৪ কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা
গাজীপুর মহানগরের জরুন এলাকার কেয়া গ্রুপের চারটি কারখানা আগামী ১ মে থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকের সঙ্গে হিসাবের অমিল, কাঁচামাল অপর্যাপ্ততা ও কারখানার উৎপাদন কার্যক্রমের অপ্রতুলতার কারণ দেখিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দেয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কেয়া গ্রুপের অ্যাডমিন ম্যানেজার মোহাম্মদ মোছা মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কেয়া গ্রুপের চারটি কারখানা আগামী ১ মে থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের চার কারখানায় চার হাজার শ্রমিক কাজ করছে। তবে আপাতত পাঁচ মাস কারখানা চলবে। মে মাস থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।'
কেয়া কসমেটিকস কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার শওকত মিয়া বলেন, 'কেয়া গ্রুপের পোশাক কারখানা বন্ধ হলেও কসমেটিকস কারখানা খোলা থাকবে।'
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব কেয়া গ্রুপ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বলেন, 'কেয়া গ্রুপের চারটি কারখানা আগামী ১ মে থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।'
তিনি জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে জরুন এলাকায় অবস্থিত কেয়া গ্রুপের কারখানার শ্রমিকেরা নভেম্বর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছেন। কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানার সামনে কোনাবাড়ি এলাকায় কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সেদিন বেতন না পেয়ে বন্ধের নোটিশ পেয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় মালিক-শ্রমিকপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে দাবিগুলো মেনে নেয় মালিকপক্ষ। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাময়িক বন্ধ থাকা কারখানা ১ জানুয়ারি খুলে দিয়ে আবার নতুন করে স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলো।
গত ৩১ ডিসেম্বর কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যান (নিট কম্পোজিট ডিভিশন) স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, 'কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড (নিট কম্পোজিট গার্মেন্টস ডিভিশন, নিটিং বিভাগ, স্পিনিং ডিভিশন, কটন ডিভিশন) ও কেয়া ইয়ার্ন মিলস লিমিটেডের (জরুন, কোনাবাড়ি, গাজীপুর) শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকের সঙ্গে হিসাবের অমিল, কাঁচামাল অপর্যাপ্ততা ও কারখানার উৎপাদন কার্যক্রমের অপ্রতুলতার জন্য আগামী ১ মে কারখানার সব কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলো। শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধি অনুযায়ী সব পাওনা কারখানা বন্ধের পরবর্তী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।'
এ বিষয়ে কেয়া গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক সাবিনা ইয়াসমিন গণমাধ্যমে বলেন, 'আগামী ১ মে থেকে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ধাপে শ্রমিকদের সব পাওনা শ্রম আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হবে।'
Comments