বেক্সিমকোয় ‘তত্ত্বাবধায়ক’, পাচার হওয়া টাকা আনতে পরামর্শক নিয়োগের সিদ্ধান্ত

বেক্সিমকো

সমস্যায় জর্জরিত বেক্সিমকো গ্রুপের পতন ঠেকাতে এবং বিনিয়োগকারী, কর্মী ও ব্যাংকগুলোর স্বার্থ রক্ষায় প্রতিষ্ঠানটির 'তত্ত্বাবধায়ক' নিয়োগসহ তিনটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ ছাড়াও, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে পরামর্শক সংস্থা নিয়োগের নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বহুল আলোচিত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান 'নগদ'র আর্থিক তথ্য পরীক্ষা ও মূল্যায়নের ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার গভর্নরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিনকে প্রতিষ্ঠানটির দেখভালে 'রিসিভার' হিসেবে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ছিলেন সালমান এফ রহমান। দেশের আর্থিক খাতে অনেক প্রভাবশালী ছিলেন তিনি। সরকার পতনের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত আগস্টে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। তিনি কর আইন মেনে চলতেন কিনা, তা খতিয়ে দেখেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

গত সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য 'রিসিভার' চাওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট তথ্য অনুসারে—পোশাক, ওষুধ, সিরামিক, তথ্য-প্রযুক্তি, মিডিয়া, আর্থিক পরিষেবা ও জ্বালানি খাতে বিশ্বব্যাপী ৭০ হাজারের বেশি কর্মী আছে।

একই সঙ্গে কয়েকটি ব্যাংক থেকে সালমান এফ রহমানের নেওয়া টাকা উদ্ধার ও পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার আদেশ দেন হাইকোর্ট।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস 'রিসিভার' নিয়োগের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে সুপ্রিম কোর্ট গত অক্টোবরে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার কাজ প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও দেশের স্বার্থ রক্ষা করা।'

১৯৭০-এর দশকে সালমান এফ রহমান ও তার ছোটভাই আহমেদ সোহেল ফসিহুর রহমান বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠা করেন।

সালমান এফ রহমান রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ ও ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে সংকটে ফেলে দেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। এটি এর পরিশোধিত মূলধনের প্রায় ৯৫০ শতাংশ।

এর মধ্যে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির ৩৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি মুনাফার তথ্য দিয়েছিল।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বেক্সিমকোর কর দেওয়ার পর মুনাফা হয়েছে ৭০৯ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে ছিল এক হাজার ২৫৪ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠাটির মুনাফা এক হাজার ৪০০ শতাংশ বেড়ে ৬৬০ কোটি টাকা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
changes in Bangladesh media industry

Allegiance shifts, so do faces at the helm

Bangladesh’s media industry has seen some major shake-ups, with more than two dozen outlets shuffling leadership positions following the July mass uprising last year.

17h ago