সালমানমুক্ত হলো আইএফআইসি ব্যাংক
আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে, ব্যাংকটির কর্তৃত্ব হারিয়েছেন সালমান এফ রহমান।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ২০১৫ সাল থেকে আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন।
সার্কুলার অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন পর্ষদে দুইজন পরিচালক ও চার জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবাদুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ জহির এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট কাজী মো. মাহবুব কাশেমকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা ও যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মনজুরুল হককে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচালক করা হয়েছে।
ব্যাংকটির ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার।
চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম যেভাবে ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করেছিলেন, ঠিক একইভাবে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান দখল করেছিলেন আইএফআইসি ব্যাংক।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেওয়ায় ছয়টি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায় এস আলম।
এস আলম গ্রুপ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত কোম্পানিগুলো ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে ৯৫ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ায় ব্যাংকগুলো তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছিল। এই ঋণের মধ্যে শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকেই নেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৯ শতাংশ টাকা।
একইভাবে বোর্ড পুনর্গঠনের মাধ্যমে সালমান এফ রহমানের প্রভাবমুক্ত করা হয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা একাধিক মামলায় ব্যাংকটির প্রধান শেয়ারহোল্ডার সালমান এফ রহমান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
তার ছেলে শায়ান ফজলুর রহমান আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক সপ্তাহ পর ১৩ আগস্ট আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালক পদ হারান ঋণ খেলাপি হওয়ায়।
অভিযোগ রয়েছে, সালমান এফ রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটি থেকে ঋণ ও বন্ডের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপের কাছে জুন পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের পাওনা ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের ৯৫০ শতাংশ।
জনতা ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ব্যাংকটির কাছে বেক্সিমকোর বকেয়া ঋণের ৭২ শতাংশ খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।
Comments