তিন মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর তারল্য কমেছে ৭৭ শতাংশ

ইসলামি ব্যাংক
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশের ইসলামি ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট আরও বেড়েছে। ইসলামী ব্যাংকিং নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে ইসলামি ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্য ৭৭ দশমিক ১৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫১৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ৬ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে উদ্বৃত্ত তারল্য কমেছে ৫ হাজার ১২৫ কোটি টাকা।

গত বছরের সঙ্গে তুলনা করা হলে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে মার্চে উদ্বৃত্ত কমেছে ২৭ দশমিক ৮২ শতাংশ, অর্থাৎ ৫৮৫ কোটি টাকা।

একটি ব্যাংকের নগদ রিজার্ভ অনুপাত (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ তারল্য অনুপাতের (এসএলআর) জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রাখার পর উদ্বৃত্ত তারল্য হিসাব করা হয়।

ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকের নগদ অর্থ, স্বর্ণ বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ আমানতের বিপরীতে সাড়ে ৫ শতাংশ সমপরিমাণ এসএলআর এবং নগদ আমানতের ৪ শতাংশ সমপরিমাণ সিআরআর রাখতে হয়।

মূলত ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরের সঙ্গে তুলনা করা হলে এ বছরের মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ১২ হাজার ২০ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা ২০২৩ সালের মার্চের চেয়ে ৪৪ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

২০২৪ সালের মার্চ শেষে পুরো ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল ইসলামি ব্যাংকগুলোর দখলে।

এদিকে এ বছরের মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা, যা গত বছরের ডিসেম্বরের চেয়ে ৩ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা কম। তবে ২০২৩ সালের মার্চের চেয়ে ২৭ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি।

চলতি বছরের মার্চ শেষে পুরো ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ২৬ দশমিক ২৩ শতাংশ ছিল ইসলামি ব্যাংকগুলোর।

ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানতের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ ছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, এরপর ১০ দশমিক ২০ শতাংশ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ এক্সিম ব্যাংকের।

এছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংক ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ২ দশমিক ৯১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি ইসলামি ব্যাংকের তারল্য সংকট সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা নিলেও তারল্য সংকট প্রকট হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাংলাদেশের ইসলামি ব্যাংকগুলোর দুই থেকে তিন বছর আগেও বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত তারল্য ছিল। কিন্তু পাঁচটি ব্যাংকে ব্যাপক অনিয়মের কারণে বর্তমানে এই খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka cannot engage with non-state actors: foreign adviser

Md Touhid Hossain also emphasised that peace and stability in the region would remain elusive without a resolution to the Rohingya crisis

21m ago