বিরল সুবিধায় ৮.৭৫ শতাংশ সুদে আরও ৪ ইসলামি ব্যাংক ঋণ নিয়েছে ৬৭৯০ কোটি

অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আরও ৪টি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে জরুরি ঋণ নিয়েছে।

'লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট' নামে পরিচিত এই বিরল সুবিধার আওতায় ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে ঋণ পেয়েছে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক গত ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে মোট ৬ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।

এর আগে এই সুবিধার আওতায় ইসলামী ব্যাংক ঋণ নিয়েছিল ৮ হাজার কোটি টাকা।

অর্থাৎ এই ৫ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে মোট ১৪ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।

সাধারণত, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো সুদ দেওয়ার বদলে 'মুনাফা'র প্রস্তাবে আমানত নিয়ে থাকে।

কিন্তু এই ৫ ব্যাংকের নগদ রিজার্ভ অনুপাত (সিআরআর) তীব্র তারল্য সংকটের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত হারের চেয়ে কম হওয়ায় সুদের বিনিময়ে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে।

গত ২৮ ডিসেম্বর এই ৫ ব্যাংকের মোট ঘাটতি ছিল ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংককে "লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট" হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কারণেই সিআরআর ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোকে এই তহবিল সরবরাহ করা হয়েছে।'

শরিয়াহ নীতি ইসলামি ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশিরভাগ পদ্ধতিতে ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেয় না। যার কারণে 'লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট' পদ্ধতিতে এই ঋণ নিয়েছে ব্যাংকগুলো।

মেজবাউল হক জানান, এই ঋণের মেয়াদ ১ রাতে হওয়ায় ঋণগ্রহীতারা ১ জানুয়ারিতেই ঋণের অর্থ পরিশোধ করে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুসারে, 'যদি বছরের শেষে ব্যাংকগুলোতে বার্ষিক ব্যালেন্স শিটে সিআরআর ঘাটতি দেখায়, তাহলে আমানতকারীদের আস্থা আরও কমবে।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলো 'লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট' পদ্ধতি খুবই কম ব্যবহার করে।

যোগাযোগ করা হলে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হাবিব হাসনাত জানান, বছরের শেষের দিকে ব্যালেন্স শিট শক্তিশালী রাখার জন্য একটি রাতের জন্য এই তহবিল নেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, 'আমাদের বড় কোনো সমস্যা নেই এবং ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য বেশ ভালো।'

অপর ৩টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, জরুরি তহবিল থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। এরপর ৩ হাজার ১২৫ কোটি টাকা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নিয়ে তৃতীয় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ১ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা চতুর্থ ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ৭০০ কোটি টাকা নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

15h ago