ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নগদ সহায়তা

‘ফেসবুক পোস্টের’ জেরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
ছবি: সংগৃহীত

তারল্য সংকটে পড়া শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নগদ অর্থ সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রথম এমন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গতকাল সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'ইসলামিক ব্যাংক লিকুইডিটি ফ্যাসালিটি'র অধীনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই স্বল্পমেয়াদী ঋণ পরিশোধের সময়কাল হবে ১৪ দিন।

বাংলাদেশের ১০টি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটি থেকে গ্রাহকরা আমানত তুলে নেওয়ায় চাপে পড়েছে এবং তারল্য সংকটে পড়ছে।

আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সম্প্রতি আমানতকারীদের আস্থা সংকটে রয়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ এই ৩ ব্যাংকের পাশাপাশি ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের বোর্ডেও প্রতিনিধিত্ব করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদী তারল্য সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছে।

সাধারণ ব্যাংকগুলো যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেয় শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো সেই প্রক্রিয়ায় নিতে পারে না।

শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে প্রচুর তারল্য উদ্বৃত্ত থাকতো। কারণ তাদের সংবিধিবদ্ধ তারল্য অনুপাত (এসএলআর) কম রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। সাধারণ ব্যাংককে তাদের আমানতের ১৩ শতাংশ এসএলআর হিসেবে রাখতে হয়, কিন্তু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ ব্যাংকগুলোকে এসএলআর ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে হয়, যার বিপরীতে তারা সুদ পায়। যেহেতু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো সুদ থেকে প্রাপ্ত আয় নিতে পারে না, তাই তাদের কম পরিমাণ এসএলআর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নগদ অর্থে রাখা হয়। এ কারণে তাদের তারল্য উদ্বৃত্ত থাকে।

আর্থিক কেলেঙ্কারি কারণে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য কমে গেছে।

এ বছর ব্যাংকিং নিয়ম লঙ্ঘন করে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, আর্থিক কেলেঙ্কারির পর শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে উদ্ধার করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে।

আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে ব্যাংকে করপোরেট সুশাসন আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

'বড় ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে যারা নিয়ম লঙ্ঘন করে ঋণ নিয়েছেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে', যোগ করেন তিনি।

'ইসলামিক ব্যাংক লিকুইডিটি ফ্যাসালিটি'র অধীনে ব্যাংকগুলোকে আমানতকারীদের মুনাফার হারের সমান মুনাফা দিতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। স্বল্পমেয়াদী ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকেও জামানত রাখতে হবে।

শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো সম্প্রতি সুকুক বন্ডে বিনিয়োগ করেছে, যা জামানত হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সরকার গত বছর থেকে সুকুক বন্ড ইস্যু করে ১৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, 'কিছু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক সুকুক বন্ডে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। এর ফলে তাদের তহবিল কমে গেছে। নতুন এই সুবিধা তাদের তহবিল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করবে।'

Comments

The Daily Star  | English

‘Syria is ours and not Assad family's’

Celebrations across Syria as rebels oust Assad; president ‘flees country’; nations urge stability

7h ago