হেমন্তের ফেরিওয়ালা
শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে ধীর পায়ে এসেছে হেমন্ত। কুয়াশামাখা ভোর, দুপুরের পর রোদের তীব্রতা কমে আসা কিংবা স্বল্পায়ু বিকেলে পেরিয়ে ঝুপ করে সন্ধ্যা নামার মতো নানা বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর এই ঋতু।
হেমন্ত পরিচিতি ফসলের ঋতু হিসেবেও। জীবনানন্দ দাশ যেমন লিখেছিলেন, 'প্রথম ফসল গেছে ঘরে,—/হেমন্তের মাঠে-মাঠে ঝরে/শুধু শিশিরের জল;/অঘ্রানের নদীটির শ্বাসে/হিম হয়ে আসে/বাঁশ-পাতা—মরা ঘাস—আকাশের তারা!/বরফের মতো চাঁদ ঢালিছে ফোয়ারা!'
আর কিছুদিনের মধ্যেই গ্রামবাংলার মাঠে-খেতে শুরু হবে আমন ধান কাটার মহোৎসব। গৃহস্থবাড়িতে ভেসে বেড়াবে নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করা পিঠাপুলির সুগন্ধ।
এই ধান মাপার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে বাঁশের তৈরি ঝুড়ি। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলঙ্কারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বংশ পরম্পরায় এই ঝুড়ি তৈরি ও বিক্রির কাজ করে আসছেন।
আমন ধানের মৌসুম সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফেরি করে ঝুড়ি বিক্রি করতে বের হওয়া আব্দুল জব্বার জানালেন, প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো এখন আর এই ঝুড়ির চাহিদা তেমন নেই। এছাড়া এই ঝুড়ি তৈরির প্রধান কাঁচামাল বাঁশের দুষ্প্রাপ্যতা, বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়া ও সঠিক দাম না পাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে অনেকে এই ব্যবসা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন।
কিন্তু বাপ-দাদার পেশার প্রতি মমত্বের কারণে আব্দুল জব্বারের মতো দুয়েকজন এখনো এই পেশাটি ধরে রেখেছেন।
গতকাল শনিবার সকালে অলঙ্কারী ইউনিয়নের এনায়েতুপুর গ্রাম থেকে ছবিগুলো তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী শেখ নাসির।
Comments