ডলারকে চ্যালেঞ্জ করে ইউয়ান-রুবলের দিকে ঝুঁকছে বলিভিয়া
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের ওপর নির্ভরতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ডলারের বিকল্প হিসেবে চীনের ইউয়ানসহ অন্য দেশের মুদ্রায় বাণিজ্য করতে আগ্রহী।
গত শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলিভিয়ার অন্যতম রাজধানী শহর লা পাজ-এ দেশটির অর্থমন্ত্রী মারসিলো মনতেনেগ্রো বলেন, 'আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের মুদ্রা ইউয়ানের ব্যবহার বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা তা অনুসরণ করতে চাই।'
এতে আরও বলা হয়, গত কয়েক মাস ধরে বলিভিয়া ডলার সংকটে ভুগছে। দেশটির মূল রপ্তানি পণ্য প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী মারসিলো আরও বলেন, 'চীন এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ। দেশটি তার পণ্যের জন্য কোন মুদ্রা আশা করবে? নিশ্চয় ডলার নয়, তাদের নিজেদের মুদ্রা।'
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বলিভিয়ার রাষ্ট্রীয় ব্যাংক বাঙ্কো ইউনিয়নের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানিকারকরা গত ফেব্রুয়ারি থেকে ইউয়ানে বাণিজ্য করছেন। গত মার্চ থেকে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলে বাণিজ্য চলছে।
গত মে থেকে চলতি জুলাই পর্যন্ত বলিভিয়ার মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ১০ শতাংশ ইউয়ানে হয়েছে। এর পরিমাণ ২৭৮ মিলিয়ন ইউয়ান বা ৩৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার।
বলিভিয়ায় রুশ রাষ্ট্রদূত মিখাইল লেদেনেভ বলেছেন, মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বলিভিয়ার বাঙ্কো ইউনিয়ন ও রাশিয়ার গাজপ্রমব্যাংক রুশ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে।
চীন ও রাশিয়া বলিভিয়ার লিথিয়ামসহ অন্যান্য খনিতে বিনিয়োগ করছে।
অর্থমন্ত্রী মারসিলো জানান, চলতি বছরের শুরুতে চীনের ২ ও রাশিয়ার ১ প্রতিষ্ঠান বলিভিয়ার সঙ্গে লিথিয়াম চুক্তি করেছে। এ দেশ ২টি বলিভিয়ায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। এর একটি অংশে ইউয়ান ব্যবহার করা হবে।
বলিভিয়া হয়ত চীনের ঋণ ইউয়ানে পরিশোধ করবে উল্লেখ করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ছাড়াও, দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যে সমন্বয় করতে চায় বলিভিয়া।
এই মহাদেশের ২ শক্তিশালী দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা বৈদেশিক বাণিজ্যে ইউয়ান ব্যবহার করছে বলেও জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে।
Comments