বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের আমদানি বাড়বে, কমবে শুল্ক

ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কিছু মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি কিছু পণ্যের আমদানি বাড়ানোর প্রস্তাব করবে। ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কিছু পণ্য আমদানির সুযোগ আছে বলেও এক প্রাথমিক নথিতে দেখা গেছে।

যেমন, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সারা বিশ্ব থেকে দুই দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়েছিল ৩৩৬ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলারের তুলা।

সেই নথির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিশ্বব্যাপী তুলা রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ ছিল ৩৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। বাংলাদেশে মার্কিন তুলার ওপর আমদানি শুল্ক শূন্য শতাংশ।

২০২৩ সালে বাংলাদেশ এক দশমিক নয় বিলিয়ন ডলারের এলপিজি আমদানি করেছে। এর মধ্যে ৫১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন ডলারের এলপিজি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র ২০ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলারের এলপিজি রপ্তানি করেছিল। বাংলাদেশ কিনেছে এর শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা এলপিজিতে বাংলাদেশ শুল্ক নেয় না।

জানা গেছে—যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পরিমাণে সয়াবিন পণ্য, গম, প্রাকৃতিক গ্যাস, স্বর্ণ, ভুট্টা, ভ্যাকসিন, জুয়েলারি পণ্য, বোর্ড ও প্যানেল আমদানির সুযোগ আছে।

বাংলাদেশ এমন পণ্যও আমদানির প্রস্তাব দেবে যা যুক্তরাষ্ট্র সারা পৃথিবীতে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি করে থাকে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ খুব কম পরিমাণ পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে থাকে।

এসব পণ্যের মধ্যে আছে তুলা, ফেরোয়াস বর্জ্য ও স্ক্র্যাপ, প্রাকৃতিক গ্যাস, গম, তেল, দুধ ও ক্রিম।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, 'আমরা এখনো নথিটি পাইনি। মার্কিন সরকারের জন্য আমাদের জবাব প্রস্তুত করছি। দুই-তিন দিনের মধ্যে তা মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে পাঠাব।'

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মোস্ট ফেভারড নেশন পদ্ধতি অনুসরণ করে শুল্কের হার যৌক্তিক করবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রও এই সংস্থার সদস্য। ফলে যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া শুল্ক হার অন্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য হবে।

তিনি জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১০০ পণ্য খুঁজে বের করতে কাজ করছে। এসব পণ্যে বাংলাদেশ শুল্ক ছাড় দিতে পারে।

এ ছাড়াও, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তিনটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করেছে। ওরাকলকে পুরো টাকা পরিশোধের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ব্যবসা সহজ করতে অশুল্ক বাধা কমানো ও অফিসগুলোকে নকল সফটওয়্যার ব্যবহার থেকে বিরত থাকারও প্রতিশ্রুতি দেবে বাংলাদেশ।

গত মাসের বৈঠকে ইউএসটিআর বাংলাদেশকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব পণ্য আমদানির পরামর্শ দেয়। যেমন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মোটরস থেকে গাড়ি এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে এলজি পণ্য আমদানি করে, যদিও এগুলো মার্কিন ব্র্যান্ড।

উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মার্কিন প্রতিষ্ঠান বোয়িংকে অগ্রাধিকার দেবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, গত ৭ মে বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইউএসটিআরের দূত জেমিসন গ্রেয়ার বাংলাদেশকে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন না করার এবং ডিজিটাল বাণিজ্যকে সীমাবদ্ধ করতে পারে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছেন।

চিঠিতে গ্রেয়ার বলেন, 'আমার টিম বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্পের ওপর শুল্ক ও অশুল্ক বাধা কমানো এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

11h ago