দেশে তুলার ব্যবহার বেড়ে ৭৮ লাখ বেল হতে পারে

তুলা, তুলা আমদানি, মার্কিন কৃষি বিভাগ,

এ বছরের আগস্টে শুরু হওয়া ২০২৪-২৫ বাণিজ্য বছরে বাংলাদেশের তুলার ব্যবহার সামান্য বেড়ে ৭৮ লাখ বেলে দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)।

গত শুক্রবার ইউএসডিএ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ইউএসডিএ'র প্রাথমিক প্রক্ষেপণে জানানো হয়েছিল, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক উৎপাদনকারী বাংলাদেশের তুলার চাহিদা ৮০ লাখ বেল।

এক বেল সমান ৪৮০ পাউন্ড বা ২১৮ কিলোগ্রাম (কেজি)।

তবে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তুলা ব্যবহারের এই পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়েছিল ইউএসডিএ। কিন্তু সর্বশেষ শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে সেই পূর্বাভাস আবার সংশোধন করে বাড়ানো হলো।

মার্কিন সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ 'তুলা: বিশ্ব বাজার ও বাণিজ্য' শীর্ষক প্রতিবেদনে তুলার ব্যবহার বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেনি।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর দেশীয় টেক্সটাইল মিলগুলোতে তুলার সার্বিক ব্যবহার আগের চেয়ে বেশি হতে পারে।

জানতে চাইলে পোশাক প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান নিউ এশিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ মতিন চৌধুরী বলেন, 'গ্যাস সংকট, কাঁচামালের দাম ও ডলার সংকটে ঋণপত্র খোলার সমস্যাসহ নানা কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রতিকূল ছিল। তবে এখন আমরা ঋণপত্র খুলতে পারছি।'

তার ভাষ্য, গত বছর তুলাজাত সুতার আমদানি ও ব্যবহার বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম কমে যাওয়ায় এ বছর দেশে সুতার উৎপাদন বাড়বে বলে ধারণা করছি।

বিশ্বব্যাংকের কমোডিটিজ প্রাইস ডাটা (দ্য পিঙ্ক শিট) অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বরে তুলার দাম আগের বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমে প্রতি কেজি ১ দশমিক ৭৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই সময়ে তুলার দাম ছিল ২ দশমিক ১১ ডলার।

এ মতিন চৌধুরী বলেন, 'তবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।'

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই ও আগস্টে দেশীয় বাজারের অবস্থা মন্থর ছিল, কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে চাহিদা বাড়তে শুরু করে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) এক কর্মকর্তা বলেন, 'সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে মিলার ঠিকমতো কাজ চালাতে পারছেন না। বিদ্যুৎ সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলে মিলগুলো সক্ষমতার ৮০ শতাংশের বেশি চলতে পারে।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে সেগুলো বর্তমানে সক্ষমতার অর্ধেক চলছে।'

ইউএসডিএ বলছে, প্রধান রপ্তানি খাতের চাহিদা পূরণে ২০২২ বাণিজ্য বছরে বাংলাদেশ ৮৮ লাখ বেল তুলো ব্যবহার করেছিল। এর পরের বছর থেকে তুলার ব্যবহার কমতে শুরু করে এবং ২০২৪ বাণিজ্য বছরে তা সাড়ে ৭৭ লাখ বেলে দাঁড়ায়।

দেশে তুলার চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। বাংলাদেশে তুলার বার্ষিক চাহিদা প্রায় দেড় লাখ বেল।

ইউএসডিএ'র তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় মিলাররা পশ্চিম আফ্রিকার দেশ থেকে তুলার বড় একটি অংশ আমদানি করেন। এর বাইরে ভারত, ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি হয়।

মার্কিন সংস্থাটির অনুমান, ২০২৫ বাণিজ্য বছরে বাংলাদেশ ৭৭ লাখ বেল তুলা আমদানি করবে, যা আগের বছরের আমদানি করা ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার বেলের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেশি।

Comments

The Daily Star  | English

No sharp rise in crime, data shows stability: govt

The interim government today said that available data does not fully support claims of a sharp rise in crimes across Bangladesh this year

1h ago