সুদের হার বৃদ্ধি না করার অনুরোধ জানাল এফবিসিসিআই
বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সুদের হার বৃদ্ধি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, 'সুদের হার বৃদ্ধি করা হলে ব্যবসা খরচ বেড়ে যাবে এবং স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুদের হারের জন্য সর্বোচ্চ সিলিং নির্ধারণ করে দিতে হবে।'
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'সুদহার নির্ধারণের চলমান স্মার্ট পদ্ধতি তুলে দিয়ে তা বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংক নিজেদের সুবিধা মতো সুদহার নির্ধারণের সুযোগ পেয়েছে। ফলে সবধরনের ঋণের সুদের হার বেড়ে যাওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে।'
'পলিসির ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত হলে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিনিয়োগকারীর আগ্রহ কমে যায়। বিনিয়োগের স্বার্থে পলিসির ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে হবে,' বলেন তিনি।
তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- ব্যাংক ঋণের খাতভিত্তিক সুদের হার ঘোষণা করবে এবং গ্রাহকভেদে ঘোষিত হারের চেয়ে এক শতাংশ কম বা বেশি হারে ঋণ বিতরণ করতে পারবে। কিন্তু এ নির্দেশনা ব্যাংকের পক্ষে অনুসরণ করা সম্ভব হবে কিনা সে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।
'বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় মূল্য অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫ টাকা থেকে ১১০-১১৭ টাকা হওয়ায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কোনো কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে এবং ঋণ খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, কাঁচামাল আমদানিনির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিলম্বিত ঋণপত্রের মাধ্যমে কাঁচামাল আমদানি করে। উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের সবসময় বিলম্বিত ঋণপত্রের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়, তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
যেমন- বিলম্বিত ঋণপত্র সর্বোচ্চ ৩৬০ দিনের জন্য হয়ে থাকে। বিলম্বিত ঋণের বিপরীতে আমদানি করা কাঁচামালের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় সংক্রান্ত হিসাব আগেই সম্পন্ন হওয়ার কারণে উৎপাদনকারীদের পক্ষে বর্তমানে ডলারের অতিরিক্ত বিনিময় মূল্য সমন্বয়ের কোনো সুযোগ থাকে না। ফলে উৎপাদনকারীদের জন্য অতিরিক্ত বিনিময় মূল্য সম্পূর্ণ লোকসানে পরিণত হয়।
লোকসানের কারণে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের দায় পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে, দায় ফোর্সড লোনে পরিণত হচ্ছে এবং উৎপাদনকারীদের ক্লাসিফাইড হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় চলতি মূলধনের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ফোর্সড লোনের দায় সৃষ্টি হওয়ার ফলে উৎপাদনকারীদের চলতি মূলধন সীমা ব্যাংকগুলোতে কমে যাচ্ছে। এছাড়াও এলসি খুলতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
Comments