ঈদের আগে ফ্রিজের চাহিদা বাড়ছে

ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর, ট্রান্সকম, ঈদুল আজহা,
অলঙ্করণ: বিপ্লব চক্রবর্তী

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ফ্রিজের চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, দাম ও নানান ছাড়ের কারণে এ বছর ঈদের আগে রেফ্রিজারেটর ও চেস্ট ফ্রিজের বিক্রি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

তারা বলেন, ঈদুল আজহার আগে ফ্রিজের বিক্রি সাধারণত ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কারণ, মানুষ কোরবানির পশুর মাংস ভালোভাবে সংরক্ষণে ফ্রিজ কিনে থাকেন।

গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্র্যান্ড বিক্রেতা র‌্যাংগস ই-মার্টের ফ্রিজ বিক্রি ১০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আশা করছে ঈদ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

র‌্যাংগস ই-মার্টের ব্র্যান্ড ম্যানেজার মুহাম্মদ নাফিস ইমতিয়াজ বলেন, 'তাদের বিক্রিতে চলমান মূল্যস্ফীতি চাপ পড়েনি। কারণ, তাদের বেশিরভাগ ক্রেতা স্বচ্ছল শ্রেণীর।'

এ ছাড়া বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এ বছর ফ্রিজের দাম বাড়েনি। পাশাপাশি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন অফার চলমান আছে। এসব অফারের কারণেও ফ্রিজের বিক্রি বাড়ছে।

ট্রান্সকম ডিজিটালের হেড অব বিজনেস রিতেশ রঞ্জনও একই কথা বলেন।

ঈদের আগে ব্যবসায়িক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা পর্যাপ্ত মজুত রেখেছি। আমরা স্যামসাং, হিটাচি, হাইয়ার, প্যানাসনিক ও ট্রান্সটেক ব্র্যান্ডের পণ্য খুচরা বিক্রয় করি। আমরা প্রতিদিন ১ হাজার ফ্রিজ সরবরাহ করতে সক্ষম।'

জাপানি ইলেকট্রনিক ব্র্যান্ড জেনারেল ও শার্পের একমাত্র পরিবেশক এস্কয়ার ইলেকট্রনিক্সের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মনজুরুল করিম বলেন, 'এ বছর ফ্রিজের চাহিদা বেশি।'

তিনি বলেন, 'আমরা প্রতিদিন প্রায় ৩০০ ফ্রিজ খুচরা বিক্রি করছি। দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কথা বিবেচনা করলে এটি সত্যিই ভালো খবর।'

তিনি জানান, গত বছর তারা প্রতিদিন গড়ে ১৮০টি ফ্রিজ বিক্রি করেছিলেন।

সারাদেশে এস্কয়ার ইলেকট্রনিক্সের ৮০টি আউটলেট এবং চার শতাধিক পরিবেশক আছে।

কোম্পানিটি ২০২৩ সালের শুরুতে রক্ষণশীল পদ্ধতি মেনে চলেছিল। কারণ, তাদের বাজার মূল্যায়নে দেখা গেছে, বছরব্যাপী ফ্রিজের চাহিদা কম থাকে। ফলে, এস্কয়ার ইলেকট্রনিক্স এবার কম পণ্য আমদানি করেছে।
মনজুরুল করিম বলেন, 'এখন আমরা ধরে নিচ্ছি চাহিদা বৃদ্ধিতে ঈদের আগে আমাদের মজুত শেষ হয়ে যাবে।'

তিনি বলেন, 'তবে বিক্রয় বৃদ্ধি সামগ্রিক অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয় না। শার্পের পণ্যের চাহিদা গ্রাহকদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি। কারণ গ্রাহকরা এই ব্রান্ডকে দামের সঙ্গে মিলিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড বলে মনে করে।'

ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর বিভাগের চিফ বিজনেস অফিসার তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'ওয়ালটন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মডেল সরবরাহ করছে। যেগুলো জ্বালানি সাশ্রয়ী ও উন্নত প্রযুক্তির।'

তিনি জানান, বর্তমানে ৫০ থেকে ৬৪৬ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ওয়ালটনের ২৫০টিরও বেশি মডেলের ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে।। এর মধ্যে ৫০টির ও বেশি নতুন ডিজাইনের, যেগুলো ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাজারে ছাড়া হয়েছে।

তিনি বলেন, 'সব শ্রেণির গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে ওয়ালটন তাদের ফ্রিজের দাম ১৭ হাজার থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে রাখে।'

চীনের কনকা ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদন ও খুচরা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ইলেক্ট্রো মার্ট লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আফসার জানান, ঈদুল আজহায় তাদের বার্ষিক বিক্রি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। তাদের টার্গেট গ্রাহক মধ্যবিত্ত শ্রেণী। তাই চলমান মূল্যস্ফীতির চাপে চাহিদা কিছুটা কম।

তবুও ফ্রিজের বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ইলেক্ট্রো মার্ট বছরে ৪ লাখ ফ্রিজ উৎপাদন করতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

8h ago