আউটস্ট্যান্ডিং উইমেন ইন বিজনেস পুরস্কার পেলেন সিরাজুম মুনিরা
পরিবেশবান্ধব পাটের হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান সুতার কাব্যের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোসাম্মৎ সিরাজুম মুনিরা। তিনি গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাসরত ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন।
তিনি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরের অনেক গ্রামীণ নারীকে পাট শিল্পে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নারীর ক্ষমতায়ন করেছেন। তার উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে আছে- ব্যাগ, মাদুর, ঝুড়ি এবং শতরঞ্জি। এগুলো স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি হয়।
মুনিরা ১৯৮০ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বেগম বদরুন্নেসা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি আইসিডিডিআর,বি-তে গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং বর্তমানে পার্বতীপুরের বাংলাদেশ হাসপাতালে লুথেরান এইড টু মেডিসিনে রিসার্চ ইনভেস্টিগর হিসেবে কাজ করছেন।
২০১৭ সালে ১০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে সুতার কাব্য গড়ে তোলেন মুনিরা। এই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উপাদান পাটকে বেছে নেন।
তবে, সুতার কব্যে নারী কর্মী নিয়োগে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে। কারণ এসব নারীদের পরিবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পরে তাদের বাড়ির বাইরে কাজের সুবিধা নিয়ে বোঝাতে সক্ষম হন। তিনি এসব নারীদের বাথরুম, রান্নাঘর, শিশু যত্ন ও প্রার্থনা কক্ষের মতো সুবিধা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, তার উদ্দেশ্য ছিল নারীদের মেধার সদ্ব্যবহার করা এবং সফলতা অর্জনের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া।
করোনা মহামারি ও মেয়ের ব্লাড ক্যানসারের কারণে ব্যক্তিগত ও পেশাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও তিনি সুতার কাব্যের হাল ছাড়েননি।
২০২২ সালে তার প্রতিষ্ঠানটির টার্নওভার ছিল ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, মুনাফার মার্জিন ছিল ১২ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২০ শতাংশ।
মুনিরার প্রতিষ্ঠানে দুটি কারখানা ইউনিট, একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, একটি শোরুম এবং ৭০০ গ্রামীণ কারিগরের নেটওয়ার্ক আছে।
সুতার কাব্য এসএমই ফাউন্ডেশনের মতো বেশ কয়েকটি সংস্থার সদস্য। এটি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছে এবং নবম এসএমই মেলায় বেস্ট জুট প্রোডাক্ট স্টল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছে।
Comments